বাংলাদেশ-ভারত পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত আবারও স্বাভাবিক হচ্ছে
সাগর হোসেন(বেনাপোল)ঃ
ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করোনার প্রভাবে বন্ধ ব্যবস্থায় নিষেধাজ্ঞা জারী কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। ফলে ধীরে ধীরে আবারও স্বাভাবিক হচ্ছে বেনাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত। বর্তমানে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে নতুন মেডিকেল ভিসা ও পুরানো বিজনেস ভিসায় বাংলাদেশিরা ভারত যাতায়াত করছেন।এছাড়া ভারত থেকেও ইমপ্লয়মেন্ট ও বিজনেস ভিসায় প্রতিদিন যাত্রীরা আসছেন বাংলাদেশে।
নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলেও শুরু হয়নি টুরিস্ট ভিসায় যাতায়াত। বর্তমানে মেডিকেল ভিসায় যাত্রীর সংখ্যা রয়েছে ৯০ শতাংশ। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ভারত সরকার গত ১৩ মার্চ বাংলাদেশিদের ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারী করেছিল। পরবর্তীতে একই নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ হয়েছিল ভারতীয়দেরও বাংলাদেশে যাতায়াত। এতে বিশেষ করে চিকিৎসা আর বাণিজ্যিক ভিসায় যাতায়াতকারীরা বেশি দূর্ভোগে পড়েছিলেন।
জানা যায়, বেনাপোল থেকে ভারতের বাণিজ্যিক শহর কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এ পথে চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণে যাত্রীরা বেশি যাতায়াত করে থাকেন। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে দুই দেশের সরকার নানান ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর মধ্যে গত ১৩ মার্চ ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় যাতায়াত বন্ধ হয় বাংলাদেশিদের। বাংলাদেশেও আটকে পড়েন ভারতীয়রা। এতে বিশেষ করে গুরুতর রোগীরা চিকিৎসার জন্য যেতে না পেরে বেকায়দায় পড়েন। যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরাও বড় ধরনের লোকসানে ছিলেন। পরবর্তীতে ৫ মাস পর প্রথমে বাংলাদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরার সুযোগ হয়। পরে বাংলাদেশিদের মেডিকেল আর বিজনেস ভিসায় যাতায়াতে সুযোগ দেয় ভারত সরকার।
ভারতগামী বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীরা বলেন, নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ায় সুযোগে চিকিৎসা ও ব্যবসার কাজে ভারতে যাচ্ছেন। তবে মেডিকেল ভিসার মেয়াদ ৩ মাস থেকে ৬ মাসের জন্য দিলেও এ ভিসায় মাত্র একবার ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। এতে কতটুকু প্রয়োজন মিটবে তা নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন রোগীরা।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার সুজন সেন জানান, ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াতে দুই দেশের যাত্রীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সার্টিফিকেট প্রয়োজন হচ্ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব বলেন, আপাতত মেডিকেল,স্টুডেন্ট আর বিজনেস ভিসায় বাংলাদেশিরা ভারত যাতায়াত করছেন। ভারতীয়রা আসছেন ইমপ্লোয়মেন্ট ভিসায়। এছাড়া কূটনৈতিক ভিসায়ও যেতে পারবেন যাত্রীরা। মেডিকেল ভিসায় যারা যাচ্ছেন তাদেরকে নতুন ভিসা নিতে হচ্ছে। বিজনেস ও স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে পুরানো ভিসা কার্যকর হচ্ছে। তবে সবার ক্ষেত্রে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট লাগছে।
জানা যায়, প্রতিবছর এপথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ দেশ-বিদেশি যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। এদের কাছ থেকে ভ্রমণকর বাবদ সরকারের রাজস্ব আসে প্রায় ১০০ কোটির কাছাকাছি। গতকাল মেডিকেল ভিসায় ভারতে গেছেন ২৮৫ জন বাংলাদেশি আর ভারতীয়রা এসেছেন ৪৩ জন।