তরুণীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টাঃরাতভর শারীরিক নির্যাতন

নিউজ ডেস্কঃ

নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী থেকে তুলে নিয়ে এক তরুণীকে রাতভর মারধর করেছে তার সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পী ও তার তিন সহযোগী।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে সাবেক স্বামীসহ ৪ জন ও সিএনজি চালকসহ অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে ভুক্তভোগী নিজেই সুধারাম মডেল থানায় মামলা করেছেন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এখন এক আত্মীয়ের বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই নারী।

অভিযুক্তরা হলেন, ওই তরুণীর সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পী, তার সহযোগী একই গ্রামের রহিম, আরমান ও সদর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের সাগর।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নিজ কর্মস্থল জেলা শহর মাইজদীর গ্রিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে মাইজদীস্থ হরিনারায়পুরের বাসায় ফিরছিলেন শিক্ষানবিশ ওই নার্স। মাইজদী পেট্রোল পাম্পের সামনে অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সামনে এসে দাঁড়ালে তিনি গন্তব্যে যাওয়ার জন্য উঠে পড়েন। পরে ওই গাড়িটি একটু সামনে গেলে দুজন যাত্রী সামনের সিটে ওঠেন। আর একটু সামনে গেলে তার সাবেক স্বামী ও আরো একজন ভিকটিমের দু পাশে উঠে বসেন। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠার পর থেকেই তার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন তার সাবেক স্বামী বাপ্পী ও সহযোগী রহিম।

চোখ-মুখ চেপে কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সিএনজি থেকে নামানোর পর বুঝতে পারেন এটি তার সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পির বাড়ি। ফাঁকা বাড়িতে সাবেক শ্বশুর-শাশুড়ি কেউই নেই। সিএনজিতে মারতে মারতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। ঘরে ঢুকিয়েও বেদম মারধর করেন তার সাবেক স্বামী। রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মুখে সিগারেটের ছ্যাঁক দেন ওই পাষণ্ড।

অপর দুইজনসহ তাকে ধর্ষণেরও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নির্যাতন সহ্য করে ধর্ষণ থেকে রক্ষা পান ওই তরুণী। ভোরের দিকে অভিযুক্তরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে থাকে। এ সুযোগে পালিয়ে মাইজদী চাচার বাসায় এসে আশ্রয় নেন তিনি। পরে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে আত্মীয়ের বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রাতে চাচার সহায়তায় মামলা করেন থানায়।

জানা যায়, ছোট বেলায় বাবাকে হারান এই ভিকটিম। নতুন করে বিয়ের পিড়িতে বসেন মা-ও। অভিভাবক শূন্য হয়ে নানির কাছেই বড় হন তিনি। নবগ্রামে নানির কাছে থাকা অবস্থায় বখাটে ইসমাইল হোসেন বাপ্পির নজরে পড়েন তিনি। বাপ্পি অনেকটা জোরপূর্বক অপ্রাপ্ত বয়সেই তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করেন। কিন্তু বিয়ে করেও বাঁচতে পারেননি তিনি। প্রায় সময়ই স্বামীর নির্যাতনের শিকার হতে হতো তাকে। মারধর করতেন শাশুড়ি, ননদ, দেবরও। গত দু’মাস আগে তাদের ডিভোর্স হয়।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে সুধারাম থানার ওসি নবীর হোসেন জানান, রাতে ভুক্তভোগীর মামলা নেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)