যোগরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় সংস্কারের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

রঘুনাথ খাঁ

সাতক্ষীরা সদরের যোগরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় সংস্কারের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

যোগরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক শাহীনুর রহমান, জাহিদুল ইসলাম, এসমতারা, সাবিনা খাতুন সহ কয়েকজন জানান, তাদের বিদ্যালয় সংস্কার ও ফার্নিচার কেনার জন্য চলতি বছরের ফেব্র“য়ারি মাসে এক লাখ ৬৬ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। প্রধান শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে ওই টাকা খরচ করার পর সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ সাক্ষরে ওই টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করার নিয়ম রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক মালামাল কেনার জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা ডেকে মালামাল কিনতে তার সঙ্গে থাকার জন্য একজন শিক্ষককে সংযুক্ত করবেন। সভাপতি বা অন্য সদস্যরা কাজ শেষে ভাউচার এ বর্ণিত খরচের হিসাব যাঁচাই করবেন। অথচ তাদের বিদ্যালয় সংস্কারে গত জুন মাস থেকে কাজ শুরু করার কথা বলে ঝাউডাঙা ইউপি’র ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য মফিজুল ইসলাম মাত্র ১৭৫ খানা ইট গেঁথে তার উপর রং করে ও ফুল কাঠের অসারী তক্তা দিয়ে চারটি টেবিল বানিয়ে সর্বপরি ২০ হাজার টাকার কাজ করে বাকী টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

যোগরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের জমি দাতা সদস্য লুৎফর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে সভাপতি মফিজুল ইসলাম প্রভাব খাটিয়ে এক লাখ ৬৬ হাজার টাকার কাজ করার দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছেন বলে জানার পর তিনি প্রধান শিক্ষক আবু আনাম ফরহাদকে সকল ভাউচার দেখানোর জন্য বলেন। একইসাথে সকল ভাউচার মিটিং ডেকে সকল সদস্যদের দেখানোর পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য কলা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন কাজে ব্যবস্থা দেখিয়ে আজো কোন সভা আহবান করেননি। এমনকি তিনি খুব শীঘ্র সভা ডেকে বিষয়টি আলোচনা করবেন বলেন জানিয়েছেন। তবে এক লাখ ৬৬ হাজার টাকার মধ্যে নিম্ন মানের ১৭৫টি ইট গাঁথা হয়েছে ও সভাপতি চারটি টেবিল ২৮ হাজার টাকায় কিনেছেন বলে প্রধান শিক্ষক তাকে জানিয়েছেন। তবে সভাপতির কেনা চারটি টেবিলের মূল্য ১২ হাজার টাকা বলে তিনি জেনেছেন। সব মিলিয়ে বিদ্যালয় সংস্কার ও ফার্নিচার কেনা বাবদ সভাপতি সর্বসাকুল্যে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ করেছেন।

যোগরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু আনাম ফরহাদ সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, নিয়ম বহির্ভুতভাবে সভাপতি মফিজুল ইসলামের কথামত কেনাকাটা ও ঘর সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে দাতা সদস্য ও অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়ে আগামি সপ্তাহে এ সংক্রান্ত কাজের জবাব দিহিতার জন্য সভা আহবান করা হবে।
ওই বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম বলেন, ভাল কাজ করলেও তার কোন সুনাম হয় না। প্রধান শিক্ষক তার উপর সকল দায়িত্ব দেওয়ায় তিনি তা করছেন। একটি কুচক্রি মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদর সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা ও ঝাউডাঙা ক্লাসটারের সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা বাসুদেব সানা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রাখমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। এ ব্যাপারে তিনি অবশ্যই খোঁজ নেবেন।#

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)