সাতক্ষীরার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিককে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

রঘুনাথ খাঁ:

’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সফল নায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর ছিদ্দিককে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার দুপুর দু’ টায় তাকে সাতক্ষীরা সদরের হাজীপুর গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মোস্তফা নুরুল আলম বলেন, আবু বক্কর ছিদ্দিক সদর উপজেলার বল্লী ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের শিক্ষক মৃত আব্দুর সোবাহান গাজীর ছেলে। আবু বক্কর ছিদ্দিকের(৭১) সঙ্গে ১৯৬৫ সালে একই সাথে তুজুলপুর গোবিন্দ চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন তারা। ১৯৭১ সালে তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে ভারতের চাকুলিয়ায় প্রশিক্ষণ নেন। পরে তিনি ৮নং সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেন। ভারত থেকে দেশে ফিরে তিনি কলারোয়ায় এসে মোসলেম কমাণ্ডার ও গফফার কমাণ্ডারের সাথে রাজাকার ও পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে ২৭ সেপ্টেম্বর বালিয়াডাঙায় সবচেয়ে বড় যুদ্ধে অংশ নেন। এ ছাড়াও তিনি কাকডাঙাসহ সীমান্তের বিভিন্ন স্থান যুদ্ধে অংশ নেন। বল্লী ইউনিয়নের রাজাকারদের বিরুদ্ধে তিনি জেহাদ ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে আবু বককÍ ছিদ্দিক মুক্তিফৌজে যোগ দেন।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আবু বক্কর ছিদ্দিক সোনালী ব্যাংকে যোগদান করেন। সোনালী ব্যাংক কর্মচারি এ্যসোসিয়শেনের দায়িত্বপূর্ণ পদ অলংকৃত করেন তিনি। ১১ বছর আগে তিনি সোনালী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ২০১০ সালে তিনি সদর মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার হিসেবে নির্বাচিত হলেও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার এনামুল হক এর সঙ্গে বিরোধ এর কারণে দায়িত্ব পালন করেননি। ডেপুটি মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার মাগফুর রহমান তার দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালে আবু বক্কর ছিদ্দিক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডের ডেপুটি কমাণ্ডার হিসেবে নির্বাচিত হন। দু’ বছরেরও বেশি সময় ধরে আবু বক্কর ছিদ্দিক লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন। গত বুধবার বিকেল তিনটায় ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বৃহষ্পতিবার ভোরে তার লাশ সাতক্ষীরায় আনা হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্রসহ অসংখ্যা গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় স্থানীয় মসজিদ প্রাঙ্গনে মরহুমের নামাজের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জোহর বাদ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জোবায়ের হোসেনের নেতৃত্বে সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক বিপ্লব কান্তি বড়–য়াসহ একদল চৌকস পুলিশ সদস্যরা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অর্নার প্রদান করেন। পরে তাকে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সদরের সাবেক কমান্ডার হাসানুজ্জামান, কলারোয়ার সাবেক কমান্ডার আব্দুল গফ্ফার, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মোস্তফা নূরুল আলম, মুক্তিযোদ্ধা নিছার আলী, আব্দুর রহমান, আব্দুল কাদের, মোসলেম আলীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)