তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার ঘোষণায় কলারোয়ায় আনন্দ মিছিল
কামরুল হাসানঃ
হাইকোর্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলাটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়ায় আনন্দ মিছিল করেছে কলারোয়ার আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার বিকেলে কলারোয়ার বিশ্বাস মার্কেটের দলীয় কার্যালয় হতে আনন্দ মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাজারের চৌরাস্তা মোড়ের পথসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কলারোয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলিমুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহবায়ক ও পৌরসভার মেয়র প্রার্থী সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী মজনু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী আসাদুজ্জামান সাহাজাদা, ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ইমরান হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ জাকির হোসেন, ভুট্টো লাল গাইন, সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রহিম, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আজিজুর রহমান, শফিউল আলম শফি, যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান তুহিন, ফরিদ খান, শ্রমিক নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম মিঠু, আব্দুর রহিম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, কলারোয়ায় দেড়যুগ আগে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় করা মামলা বাতিল করা আবেদন খারিজ করে তিন মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
ওই ঘটনার সময় আসামি রকিবের বয়স দশ বছর ছিল উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টা মামলাটি বাতিল চেয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে আবেদন করে রকিব। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট রুল দিয়ে মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। এরপর থেকে আর মামলার কার্যক্রম এগোয়নি। বিষয়টি জানার পর সম্প্রতি রাষ্ট্রপক্ষ এ সংক্রান্ত রুল শুনানির উদ্যোগ নেয়। এর ধারাবাহিকতায় ২৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রুল শুনানি শুরু হয়।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর জানান, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরায় যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সড়ক পথে ঢাকায় ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটে। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এতে আহত হন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাংবাদিক। ওই ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন কলারোয়া থানায় মামলা করতে যান, তবে তা গ্রহণ করা হয়নি।
রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য, ঘটনার এক যুগ পর ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা আদালতে নালিশি অভিযোগ করেন কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেন।
তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৭ সালের ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন হয়। এর বিরুদ্ধে আসামি রকিব হাইকোর্ট বাতিল আবেদন করে। এ ছাড়া আসামিপক্ষে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। বৃহস্পতিবারের এ আদেশে ওই মামলার বিচারকার্য আবারও শুরু হচ্ছে বলে জানা যায়।
Please follow and like us: