আমিরাতে কুড়িয়ে পাওয়া ২৪ লাখ টাকা ফেরত দিলেন বাংলাদেশের মহসিন
নিউজ ডেস্ক:
বিশ্বজুড়ে চলছে মহামারি করোনার প্রকোপ। এর মধ্যে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের আলোচনা ছাপিয়ে আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মুখে এখন এক বাংলাদেশির সততার গল্প। যে গল্পের নায়ক প্রবাসী ব্যবসায়ী মুহাম্মদ মহসিন সুমন। তার বাড়ি ফেনী জেলার দাগন ভূঁইয়া থানার দেবরামপুরে।
গত বুধবার আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির শিল্পনগরী মোছাফ্ফাতে পরিত্যক্ত একটি গাড়ির সিটের নিচে প্রায় ২৪ লাখ টাকা কুড়িয়ে পান মহসিন সুমন। টাকা পাওয়ার পর তিনি আবুধাবি পুলিশ স্টেশনে গিয়ে জমা দেন এবং টাকার প্রকৃত মালিককে টাকা ফিরিয়ে দিতে অনুরোধ করেন। এত টাকা কুড়িয়ে পেয়ে ফিরিয়ে দেয়ায় বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন আবুধাবি পুলিশ প্রশাসন।
মহসিন সুমন জানান, যেহেতু গাড়িটি রিকভারিতে করে আমার গ্যারেজে এসেছে তাই টাকার মালিককে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। টাকার মালিকের জন্য আমি একদিন অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু কেউ আসেনি। তাছাড়া টাকাগুলো এত বেশি পুরাতন ছিল যে, দেখে মনে হচ্ছে অনেকদিন ধরে সেগুলো সিটের নিচে পড়েছিল। পর দিন পুলিশ স্টেশনে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে দিই। পুলিশ আমার সব তথ্য রেখেছে। প্রকৃত মালিককে খুঁজে পেলে আমাকে ডেকে তার হাতে টাকা তুলে দিবেন বলে জানিয়ে আবুধাবি পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, এক সময় আবুধাবি প্রবাসীদের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান আল-মোল্লা বিল্ডিংয়ে আবদুল হক নামে আমার বাবার একটা মুদির দোকান ছিল। সে সময় থেকে একজন সৎ ব্যবসায়ী হিসেবে আবুধাবিতে আমার বাবার ব্যাপক পরিচিতি ছিল। সন্তান হিসেবে তার কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি ২৪ লাখ নয় ২৪ কোটি টাকা পেলেও আমি ফিরিয়ে দিতাম।
মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী রনি নামের এক আবুধাবি প্রবাসী জানান, মহসিন সুমেনর আল আরাফাত কার ওয়াশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বয়স বিশ বছর। প্রায় সময় গ্রাহকের ফেলে যাওয়া আমানত ফিরিয়ে দিয়ে তারা এ ধরনের সততার অনেক নজির রেখেছে এবং সুনামের সাথে ব্যবসা করছে। আবুধাবির মোছাফ্ফাতে ২টি কার ওয়াশ, স্পেয়ার পার্টসসহ মুহাম্মদ মহসিন সুমনের কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি আরও বলেন সুমনের সততার কারণে আমরা প্রবাসীরা গর্বিত ও আনন্দিত।
বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএই’র সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন ইতোমধ্যে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে আমরা মহসিন সুমনকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। এরকম সৎ মানুষের দেশ সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতার কারণে দেশে ও প্রবাসে আমরা প্রবাসীরা বুক ফুলিয়ে পরিচয় দিতে পারি, আমি একজন বাংলাদেশি ও রেমিট্যান্স যোদ্ধা।