সাতক্ষীরা আশাশুনির নূরুলের ৩ টাকার টুপি এখন বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে
আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের পুরোহিতপুর গ্রামের নূরুল ইসলাম মোড়লের তৈরি টুপি এখন বিভিন্ন দেশে বিক্রী হচ্ছে। আর নূরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী টুপি বিক্রয় করে সংসার নির্বাহের পাশাপাশি সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নূরুল ইসলাম ১৯৬৫ সালে ভারতের ২৪ পরগণায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালে ভারত ছেড়ে আশাশুনি উপজেলায় এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। গুনকরকাটি খানকায়ে আজিজীয়ায় পীর কেবলার আশ্রয়ে থেকে তার ছোট বেলার জীবন কেটে যায়। এক পর্যায়ে তিনি পীর কেবলার ছিলছিলার বিশেষত্ব “৫ কলি” টুপি নিজ হাতে তৈরির চিন্তা মাথায় নিয়ে কাজ শুরু করেন। প্রথমতঃ বার্ষিক ওরশে এ টুপি বিক্রয় করতেন। আস্তে আস্তে পীরের দরবারে বছরের সকল অনুষ্ঠানে তার টুপি নিয়ে ছোট্ট দোকান বসিয়ে বিক্রয় করতে দেখা যেত। যখন নিজে আয়ক্ষম হলেন তখন, সংসার গড়ার অনুমতি মিলল। তাই ১৯৮৫ সালে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ হন। বিবাহের পর থেকে স্বামী- স্ত্রী দ’ুজন মিলে নিজ বাড়ীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স:) সুন্নাত টুপি তৈরির কাজ করা শুরু করেন। সেই থেকে প্রতি শুক্রবার তিনি নিজ হাতে তৈরি টুপি গুনাকরকাটি খায়রিয়া আজীজিয়া দরবার শরীফে বিক্রি করে থাকেন । এ ছাড়া পুরো বছর ধরে পীরের দরবারের সকল অনুষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন ওরশ শরীফে তিনি তা বিক্রি করেন। ১৯৮৫ সালের প্রথম দিকে তিনি ৩ টাকা মূল্যে টুপি বিক্রি করা শুরু করেন। বর্তমানে সেই টুপি ১০ থেকে ২০ টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তিনি গুনাকরকাটি দরবার শরীফের ভক্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন অ ল ও ভারতে সফরে টুপি বিক্রি করেন। এছাড়া, তার নিজ হাতে তৈরি টুপি বিভিন্ন দেশে বিক্রি হয়ে থাকে। তিনি টুপি তৈরির আয়ে জীবিকা নির্বাহসহ ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া করাচ্ছেন। বর্তমানে তার একটি মেয়ে ইংরেজিতে অনার্স করছে ও ছেলে এইচএসসি পাশ করেছে। অন্য মেয়ে এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে তার টুপি তৈরির কাজে স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলে সহযোগিতা করে। তিনি জানান অর্থের অভাবে বেশি টুপি বানাতে পারিনা, সরকারি বে-সরকারি সহযোগিতা পেলে পেশাটাকে বাঁচিয়ে দেশে বিদেশের মানুষের আরো বেশি খেদমত করা সম্ভব হত।