সিনহা হত্যা মামলায় সাক্ষী হচ্ছেন সিফাত-শিপ্রা

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রানী দেবনাথ মূল সাক্ষী হতে পারেন বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। এরইমধ্যে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাব মনে করছে, সিফাতের সামনেই যেহেতু ঘটনা ঘটেছে, তাই তার বক্তব্য আগে জানা প্রয়োজন। সিফাত ও শিপ্রার বক্তব্য জানার পর রিমান্ডে নিয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সিফাতের বক্তব্য আগে জানার প্রয়োজন বলেই সাত আসামিকে রিমান্ডে এখনো নেয়া হয়নি।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, সিফাত ও শিপ্রার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য না হলে তারা মামলা বাতিল বা কোয়াশমেন্টের আবেদন করতে পারেন। এরপর তারা চাইলে সাক্ষীও হতে পারেন। আদালতে নিজেরা অথবা আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করে বলতে পারেন যে, ওই ঘটনায় তারা সাক্ষী হিসেবে বক্তব্য দিতে চান।

গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় হত্যা ও মাদক আইনে এবং রামু থানায় মাদক আইনে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করে। এ মামলায় নিহত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের সঙ্গে থাকা শাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রানী দেব নাথকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

এরপর, ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ৬ আগস্ট বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ ৭ আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

মামলার শুনানিতে র‌্যাবের পক্ষ থেকে প্রত্যেক আসামির ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকি ৪ জনকে ২ দিন কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। পলাতক ২ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

চারজনকে কারাফটকে ২ দিন জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন করে র‌্যাব। ওসি প্রদীপ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে র‌্যাবের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কথা রয়েছে।

পুলিশের দায়ের করা রামু থানার মামলায় সিনহার সহযোগী স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী শিপ্রা রানী দেবনাথ গতকাল জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে। অপরদিকে টেকনাফ থানায় দায়ের করা ২টি মামলায় মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের সঙ্গে থাকা শাহেদুল ইসলাম সিফাত জামিনে কারামুক্তি পান।

এর আগে, বেলা ১১ টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ জামিন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে সিফাতের মামলা দুটি বিবাদী পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের ভার র‌্যাবকে দিয়েছে আদালত।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)