দেবহাটায় শিশুসহ গৃহবধূকে পিটিয়ে জখম ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা
দেবহাটায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে শিশু সন্তানসহ শামিমা ইয়াসমিন সাথী (২৫) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে জখম ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার রাতে মারপিট ও শ্লীলতাহানীর শিকার গৃহবধূর স্বামী দক্ষিন সখিপুর গ্রামের আলহাজ্ব মো. নুরুল ইসলামের ছেলে কবির হোসেন বাদী হয়ে দুই শিশু সন্তান সহ তার স্ত্রীকে মারপিট ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে দেবহাটা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং-০৫।
মামলার এজাহার নামীয় আসামীরা হলেন, দক্ষিন সখিপুর গ্রামের মৃত বাবুর আলী সরদারের ছেলে আজগার আলী (৩৫), তার স্ত্রী ফারহানা খাতুন (২২), আকবর আলীর স্ত্রী সালমা খাতুন (৪০), এবং ছেলে আবু সাঈদ (২০)।
এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুর্ব শত্রুতার জের ধরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গৃহবধূ শামিমা ইয়াসমিন সাথীর বাড়ীতে ঢুকে দুই শিশু সন্তানসহ তাকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষরা। সেসময়ে আসামীরা গৃহবধূ সাথীর শ্লীলতাহানী, তাকে হত্যার চেষ্টা এবং কাছে থাকা স্বর্ণালঙ্কারও ছিনিয়ে নেয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সখিপুরস্থ দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে গত কয়েকদিন সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
আহতের স্বামী কবির হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী মৃত বাবুর আলী সরদারের ছেলে আকবর আলীর পরিবারের সাথে তাদের বিরোধ চলে আসছিলো। সম্প্রতি তাদের আরেক প্রতিবেশী নওশের আলী মারা গেলে মঙ্গলবার তাদের বাড়ীতে মৃত্যু পরবর্তী অনুষ্ঠান ছিলো। ৩০/৪০ জন আত্মীয় স্বজনের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় কবির হোসেনের বাড়ীতে।
কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে বুধবার সকালে ডেকোরেটরের সামগ্রী ফেরত আনতে একটি ভ্যান ভুল করে কবির হোসেনের বাড়ীর পরিবর্তে পূর্ব বিরোধ থাকা প্রতিবেশী আকবর আলীর বাড়ীতে ঢুকে পড়ে। এসময় আকবর আলী, তার স্ত্রী সালমা খাতুন, ছেলে আবু সাঈদ, আকবরের ভাই আজগার আলী ও তার স্ত্রী ফারহানা খাতুন ক্ষিপ্ত হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে নিে কবির হোসেনের বাড়ীতে ঢুকে শামিমা ইয়াসমিন সাথীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
সেসময়ে কবির হোসেন বাড়ীতে ছিলেননা। গালিগালাজের একপর্যায়ে তারা কবির হোসেনের স্ত্রী শামিমা ইয়াসমিন সাথী ও তার দুই শিশুকন্য সাদিয়া খাতুন (৮) এবং মাহি (২) কে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। পাশাপাশি আহতবস্থায় গৃহবধূ শামিমা ইয়াসমিনের শ্লীলতাহানী, তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা এবং কাছে থাকা স্বর্নালঙ্কার ছিনিয়ে নেয় আসামীরা। পরে স্থানীয় প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে পৌছে গুরুতর আহত অবস্থায় গৃহবধূকে শামিমা ইয়াসমিন সাথীকে উদ্ধার করে দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে তার চিকিৎসা শেষ রবিবার রাতে শামিমা ইয়াসমিনের স্বামী কবির হোসেন বাদী হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এদিকে মামলা দায়েরের পর থেকে আসামীরা বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে ভিকটিম গৃহবধূ ও তার শিশু সন্তানদের প্রাননাশের হুমকি যাচ্ছে বলেও কবির হোসেন তার অভিযোগে জানিয়েছেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, দুই শিশু সন্তানসহ গৃহবধূকে মারপিট ও শ্লীলতাহানীর ঘটনায় জড়িত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে।