ঈদে গণপরিবহন চললেও বিক্রি হচ্ছে না অগ্রিম টিকিট

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে গণপরিবহন চললেও অগ্রিম টিকিট বিক্রির কোনো প্রস্তুতি নেই। যে গতিতে যাত্রী পরিবহন চলছে একইভাবে ঈদযাত্রা চলতে পারে বলে জানা গেছে।

যে কোনো ঈদের কমপক্ষে ২০-২৫ দিন আগেই গণপরিবহনে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। তবে এবার প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। করোনার কারণে ঈদে গণপরিবহন চলবে কিনা প্রথমে তা নিয়েই ছিল ধোঁয়াশা। সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে সেই ধোঁয়াশা কেটে গেলেও অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে না।

গণপরিবহন মালিক সংগঠন বলছে, এবার ঈদের অগ্রিম টিকিট তারা বিক্রি করবেন না। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ঈদুল আজহার ১৫ দিন আগে থেকেই অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু এবার ঈদের মাত্র ১৪ দিন বাকি থাকলেও অগ্রিম টিকিট বিক্রির কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি মালিক সংগঠন বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, আমরা এবার ঈদের অগ্রিম টিকিট বেচব না। কারণ কখন গাড়ি চলে কখন বন্ধ হয় তারই ঠিক নেই। এছাড়া করোনার কারণে চলাচলকারী বাসের সংখ্যা সীমিত হয়ে গেছে। এবার ঈদের যাত্রী সংখ্যা আহামরি বেশি যে হবে, তাও নয়। তাই ঈদের অগ্রিম টিকিট আমরা বেচব না।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত এবার ঈদ যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি করবো না। যাত্রী যদি আসে টিকিট দিয়ে বাসে উঠিয়ে দেব। অন্যবার তো ২০-২৫ দিন আগেই টিকিট বেচা-বিক্রি শুরু করি। কিন্তু এবার আর ১৫ দিনও নেই। টিকিট আর কবে বেচব।

রমেশ চন্দ্র ঘোষ আরও বলেন, আমরা রিস্কে যেতে চাচ্ছি না। আর যাত্রী তো থাকা লাগবে! যাত্রী হলে বাস চলবে। যাত্রী থাকলে বাসও গন্তব্যে যাবে। কিন্তু অন্যান্য বারের মতো কাউন্টারে ভিড় করে টিকিট বিক্রির রিস্ক নিচ্ছি না।

তিনি বলেন, করোনার মধ্যে কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করা তো রিস্কি। আর বাসের সিডিউল দিলে তো সিডিউলের বাসে যাত্রী হতে হবে। করোনার কারণে এমনিতেই একটা নির্দেশনা আছে যে, সামাজিক দূরত্ব ও সুরক্ষা মেনে বাস চালাতে হবে। সেটাও মানতে হবে আমাদের। আবার অনেক পরিবহনের হেলপার আছে কিন্তু চালক, সুপারভাইজার নেই। তাদেরও তো ম্যানেজের ব্যাপার থাকে।

তিনি বলেন, টিকিট আমরা অনলাইনে ও কাউন্টারে বিক্রি করবো। বাসও কাউন্টারেই থাকবে। যাত্রী টিকিট কেটেই বাসে উঠতে পারবেন। সে ব্যবস্থা হচ্ছে।

রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ঈদের আগে বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের শেষ মিটিং বসবে শনিবার (১৮ জুলাই)। সেই মিটিংয়ে চূড়ান্ত হবে ঈদযাত্রায় কীভাবে চলবে বাস।

অন্যদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, আগের নির্দেশনা মতোই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব ও সুরক্ষা নিশ্চিত করেই গণপরিবহন চলবে। তবে করোনার কারণে যেহেতু বাস কম চলছে, সেটা কমবে নাকি বাড়বে তা নির্ভর করছে যাত্রীর উপর। যাত্রী বাড়লে বাসও বাড়বে।

তিনি বলেন, এবার ঈদে বিশেষ ব্যবস্থায় টিকিট বিক্রি করছি না। তবে স্বাভাবিকভাবে অনলাইন ও কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হবে। তাই ঈদের টিকিট কেনা নিয়ে উপচে পড়া ভিড় বা হুমড়ি খেয়ে পড়ার দৃশ্য দেখা যাবে না।

করোনায় সামাজিক দূরত্ব ও সুরক্ষার নামে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে ৬০ শতাংশ। কিন্তু ঈদকেন্দ্রিক নতুন করে ভাড়া বাড়ানোর পায়তারা থাকে সেটা নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ থাকছে কিনা জানতে চাইলে খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, সেটা দেখার জন্য মনিটরিং টিম থাকবে, বিআরটিএর সঙ্গে বৈঠক হবে। তাদেরও মনিটরিং টিম মাঠে থাকবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩১ জুলাই বা ১ আগস্ট দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে করোনা বিস্তাররোধে সব সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবশ্যিকভাবে কর্মস্থলে অবস্থানের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এবার ঈদুল আজহার ছুটি বাড়ছে না, ছুটি তিনদিনই থাকছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)