খুলনায় টাকায় মিলছে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট
করোনা আতঙ্ককে পুঁজি করে কিছু অসাধু মানুষের জালিয়াতি যেন থামছেই না। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গড়ে উঠেছে একটি জালিয়াতির শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন উপায়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করছে।
অনুসন্ধানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফটম্যান পদে কর্মরত নওশাদ নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে করোনা নেগেটিভ সনদ প্রদানের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। তবে এই সিন্ডিকেটের রাঘববোয়ালরা রয়েছে সম্পূর্ণ ধরা ছোঁয়ার বাইরে। নওশাদ গং নগরীর ২৬ বিকে রায় ক্রস রোডস্থ করোনা পজিটিভ গৃহবধূ তানিয়াকে গত ১২ জুলাই তাকে করোনা নেগেটিভ সনদ প্রদান করে।
ওই গৃহবধূর নেগেটিভ রিপোর্টে নমুনা আইডি নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে কেএমসি-২০০২৩ ও নমুনা গ্রহণের তারিখ ৭ জুলাই এবং টেস্টের তারিখ ১২ জুলাই উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া নগরীর পশ্চিম বানিয়াখামার ঠিকানায় শামীম আহমেদ নামে এক ব্যক্তি ৮ জুলাই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফ্লু কর্নারে নমুনা টেস্টে পজিটিভ রিপোর্ট আসলেও নওশাদ একদিন আগে অর্থাৎ ৭ জুলাই আইডি নম্বর কেএমসি-১৯০৩১ দেখিয়ে পজিটিভ রিপোর্টকে নেগেটিভ করে প্রদান করেছে।
শামীম আহমেদ মুঠোফোনে জানান, নওশাদ তার পরিচিত ছোট ভাই। তার মাধ্যমেই নেগেটিভ রির্পোট পেয়েছেন। এটি একটি নকল রিপোর্ট কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ব্যবসার কাজে চুকনগরে আছি। আমি খুলনায় গিয়ে খোঁজ নেবো।
একইভাবে কথা হয় গৃহবধূ তানিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, হাসপাতালেই নওশাদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে পরিচয়ের মাধ্যমে তার থেকে রিপোর্ট পেয়েছেন। সঠিক না নকল রিপোর্ট তা তার জানা নেই।
এদিকে খুমেক হাসপাতাল আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও আইসোলেশন ইউনিটের মুখপাত্র ডা. মিজানুর রহমান জানান, কেএমসি-১৯০৩১ এবং কেএমসি-২০০২৩ স্যাম্পল আইডি নম্বর দুটিই ভুয়া। এই নম্বরে কোনো রিপোর্ট নেই। তিনি অসাধু চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক রেজা সেকেন্দারের সঙ্গে। হাসপাতালে কর্মরত একজন লিফটম্যান কিভাবে জাল সনদ প্রদান করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বিষয়টি জানা নেই। তবে অনুসন্ধানে সত্যতা পেলে অবশ্যই এই চক্রকে পুলিশে সোর্পদ করবো।
এ ব্যাপারে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ-উজ-জামান বলেন, এ চক্রকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা উচিত। সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার চিকিৎসা, সেই চিকিৎসা নিয়ে যারা বাণিজ্য করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
নওশাদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি রিপোর্ট প্রদানের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
সূএ-ডেইলি বাংলাদেশ