সাতক্ষীরার তালায় চলতি মৌসুমে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি
চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। অধিক তাপমাত্রা আর সময়মত প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে বেশির ভাগ ক্ষেতে পাটের চারা গজাতে পারেনি। যে কারণে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি বলে জানা গেছে।
তালা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে তালা উপজেলায় তিন হাজার ১০ হেক্টর জমিতে ৩৩ হাজার ৮৬২ বেল পাট উৎপাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মাত্র তবে এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। আর এসব জমির অধিকাংশতেই আবাদ করা হয়েছে তোষা জাতের পাট।
রহিমাবাদ গ্রামের ইনসার আলী, জিয়ারুল ইসলাম, হাজরাকাটী গ্রামের রহমত আলী, বিজন সরকার,সন্দীপ ঘোষসহ কয়েকজন পাট চাষী বলেন, চাহিদা অনুযায়ী দাম না পেয়ে তারা বছরের পর বছর ঠকেই যাচ্ছেন। এজন্য প্রতিবছর চাষের জমি কমে যাবার পাশাপাশি কমছে পাট চাষ। তবে চলতি মৌসুমের প্রথম দিকে পানি সেচ দিয়ে চাষ শুরু হলেও বৈশাখের শেষ সপ্তাহের কম বেশি বৃষ্টি হয়। ফলে চাষীদের পাট চাষে কিছুটা সুবিধা হয়েছে।
তারা আরো জানান, সার, বীজ ও কীটনাশকের সঙ্কট না হলে তালাতে পাটের উৎপাদন ভাল হবে। তবে অধিকাংশ কৃষক বিএডিসি’র বীজ বপন না করে জেআরআর, নবীন- ০৯৮৯৭, তোষা পাট-৮, দেশি পাট, ভারতের মহারাষ্ট্র ও বঙ্কিম বীজ বপন করেছেন। তারা উক্ত বীজের ওপর বেশি আস্থাশীল বলে জানান। তবে ধান কাটার পরপরই পাট ক্ষেতে আগাছা পরিস্কার করার শ্রমিক পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। যে কারণে অনেক ক্ষেত্রে পুরুষদের পাশাপাশি নারী শ্রমিক দিয়ে পাট ক্ষেত পরিচর্যা করে থাকেন তারা। তবে কৃষি বিভাগ পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দৃশ্যমান নানা সমস্যা সমাধানে কৃষকদের পরামর্শ অব্যাহত রেখেছেন বলে কৃষকরা জানান।
তালা উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শুভ্রাংশু শেখর দাশ বলেন, এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় পাটের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম হয়েছে। তবে, কৃষকদের করণীয় সম্পর্কে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।সাতক্ষীরা পাট অধিদপ্তরের মূখ্য পরিদর্শক আশীষ কুমার দাশ জানান, উপযুক্ত সময় বৃষ্টি না হওয়ায় এবং কিছু এলাকায় লবনাক্তকার কারণে অত্র এলাকায় পাট চাষ কিছুটা কম হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সাতক্ষীরায় খুব ভাল মানের পাট উৎপাদন হয়। এ বছর ভরা মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে, দ্রুতই পাটের আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।