জামিনে থাকা সাতক্ষীরার রাজাকার কমান্ডার আব্দুল্লাহ হেল বাকী মারা গেছেন
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামিনে থাকা সাতক্ষীরার রাজাকার কমান্ডার আব্দুল্লাহ হেল বাকী মারা গেছেন।
সোমবার (১৩ জুলাই) রাত পৌনে দশটার দিকে রাজধানীর লালবাগে ভাড়া বাসায় তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান।আব্দুস সাত্তার পালোয়ানের মতে, এই আসামির বয়স ১০৬ বছর।
এ মামলার চার আসামির বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট থেকে তদন্ত শুরু হয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়।২০১৮ সালের ৫ মার্চ এসব আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেওয়া হয়।বর্তমানে মামলাটি আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর্যায়ে রয়েছে।
চার আসামির মধ্যে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য খালেক মন্ডল গ্রেফতার হয়ে কারাগারে
এবং কমান্ডার আব্দুল্লাহ হেল বাকী শর্তসাপেক্ষে জামিনে রয়েছেন। বাকি দুই আসামি খান রোকনুজ্জামান ও জহিরুল ইসলাম টেক্কা খান পলাতক।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর ছিলেন জেয়াদ আল মালুম ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামি খালেক মন্ডলের পক্ষে মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন ও অপর আসামি সাতক্ষীরার রাজাকার কমান্ডার আব্দুল্লাহ হেল বাকীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
পলাতক দুই আসামির পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এমইএইচ তামিম।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ৬ জনকে হত্যা, ২ জনকে ধর্ষণ, ১৪ জনকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ।
২০১৫ সালের ১৬ জুন ভোরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খলিলনগর মহিলা মাদ্রাসায় নাশকতার উদ্দেশ্যে কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে গোপন বৈঠকের অভিযোগে আব্দুল খালেক মণ্ডলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই বছরের ২৫ আগস্ট খালেক মণ্ডলের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলার মধ্যে শহীদ মোস্তফা গাজী হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখান ট্রাইব্যুনাল।
শিমুলবাড়িয়া গ্রামের রুস্তম আলীসহ পাঁচজনকে হত্যার অভিযোগে ২০০৯ সালের ২ জুলাই খালেক মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন শহীদ রুস্তম আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম গাজী।
২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চারজনের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। পরে ৮ মার্চ অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
ওই বছরের ১৭ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের বুলারাটী গ্রামের বাড়ি থেকে আব্দুল্লাহ-হেল বাকীকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯ মার্চ হাজির করা হলে ঢাকায় থাকা ও ধার্য দিনে হাজিরের শর্তে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম আব্দুর রউফের হেফাজতে বাকীকে জামিন দেওয়া হয়েছিলো।