৩৮ তম বিসিএস এ শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হলেন আশাশুনির সুমন ঘোষ
আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের আগরদাঁড়ি গ্রামের কৃতি সন্তান রতন ঘোষ ও মালতি রাণী ঘোষেন ছেলে সুমন ঘোষ। ৩৮ তম বিসিএস-এ শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন।
সুমন ঘোষ অভাবের সংসারে বেড়ে উঠেছেন। পিতা একজন কৃষক। কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি অসুস্থ হয়েও ভারতে চিকিৎসার জন্য বহু টাকা ব্যয় হয়, সেই থেকে তার সংসারের অভাব-অনটন লেগেই আছে। তাই সুমনের লেখাপড়া শেখাতে খুব কষ্টস্বীকার করেছেন। ছেলের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হলে টিউশনি শুরু করেন সুমন ঘোষ।
অসহায় হয়ে পড়া দিনগুলোর কথা বলে আবেগাপ্লুত হয়ে মা মালতি রানী ঘোষ কেঁদে ফেলে বলেন, তার বাবা অসুস্থ হয়ে ভারতে চিকিৎসা খরচ যোগাতে পরিনি। সুমন ঘোষ এর ঠাকুর দাদা গণেশ ঘোষ জানান, বাবা অসুস্থ হয়ে ভারতে চিকিৎসা করাতে খুব অসহায় হয়ে পড়েছিলাম। দিন চলতো না ঠিকমতো। খেয়ে না খেয়ে থেকেছি। প্রয়োজনীয় খরচ ছেলেকে কোনোদিন দিতে পারিনি। তবে চেষ্টা করেছি সাধ্যমতো। ছেলে বিসিএস ক্যাডার হয়েছে। তবে এটি কি জিনিস আমি বুঝি না। তবে ছেলে বলেছে ভালো চাকরি পেয়েছে। আমাদের আর অভাব থাকবে না। খুব খুশি হয়েছি। ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।
উল্লেখ্য, সুমন ঘোষ ২০০৭ সালে আগরদাঁড়ি রহিমিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর বুধহাটা বিবিএম কলেেিয়ট স্কুল থেকে জিপিএ-৪.৬০ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে ইংলিশে অনার্স ভর্তি হন। ২০১৬ সালে অনার্স ও ২০১৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
অসহায়ত্বের দিন গুলোর কথা তুলে ধরে সুমন ঘোষ বলেন, অভাবের মধ্যেই বেড়ে উঠেছি। মাস্টার্স শেষ করার পর বিভিন্ন স্থানে চাকরির পরীক্ষা দিয়েছি। বার বার ব্যর্থ হয়েছি। তবে আমি স্বপ্ন দেখতাম বিসিএস ক্যাডার হব। ২০১৭ সালে ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো। পরীক্ষা দিয়েই বুঝেছিলাম আমার নাম আসবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলাম। এরপর অবশেষে শিক্ষা ক্যাডারে আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পরিশ্রম করলে সব সম্ভব। আমি চেষ্টা করেই আজ সফল হয়েছি। স্বপ্ন পুরণ হয়েছে। স্বপ্ন পুরণ হওয়ায় আমি খুব খুশি। এখন সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমার ওপর আসা রাষ্ট্রের সরকারি দায়িত্ব পালন করতে চাই। সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাই।