কুল্যা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ: তদন্ত অনুষ্ঠিত
আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছেত আল হারুন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, সরকারি সম্পদ, ত্রাণ আত্মসাৎ, স্বজনপ্রীতি, দুর্ব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে সকল (১২ জন) ইউপি সদস্য কর্তৃক আনীত অনাস্থা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন সুলতানার কার্যালয়ে এ তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়।
কুল্যা ইউনিয়ন পরিষদে ৩ জন সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার ও ৯ জন মেম্বার স্বাক্ষরিত অনাস্থা প্রস্তাবে ইউপি চেয়ারম্যান হারুন চৌধুরী ইউনিয়ন পরিষদের মাঠ ভরাটের প্রকল্প দিয়ে ৭ মেঃটন চাল উত্তোলন করে এক ঝুড়ি মাটি না ফেলে আত্মসাৎ, ইউডিসি উদ্যোক্তাকে অপসারণ করে তদস্থলে নিজের লোক বসিয়ে শত শত নিবন্ধন করিয়ে নিবন্ধনের উৎস থেকে হাজার হাজার টাকা আত্মসাৎ, সরকারি ত্রাণ আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সরকারি সম্পদ বন্টনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর ৩৯ ধারা বিধি মোতাবেক অনাস্থা প্রস্তাব এনে তারা অনাস্থা প্রস্তাবটি গ্রহণ পূর্বক দুর্নীতিবাজ, ধ্রুন্ধর, ত্রাণ আত্মসাৎকারী, ক্ষমতার অপব্যাহরাকারী উক্ত চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব হতে অপসারণের দাবী জানান। আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত কর্মকর্তা এসি (ল্যান্ড) শাহিন সুলতানা সকল অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের মৌখিক জবানবন্ধী গ্রহন করেন। আগামী রবিবার সকলকে তাদের লিখিত বক্তব্য দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত শেষে অভিযোগকারীরা আশাশুনি প্রেসক্লাবে গিয়ে জানান, তাদের আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ সত্য, সকল প্রমান তাদের কাছে আছে, তদন্তকালে জানান হয়েছে এবং লিখিত বক্তব্য জমার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও প্রমানাদি জমা দেওয়া হবে। তারা বলেন, চেয়ারম্যান ত্রাণ বিতরণের মাষ্টাররোলে নাম দিয়ে তাদেরকে ত্রাণ না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। করোনার মালামাল ও টাকা বিতরণেও অনিয়ম ও আত্মসাৎ করেছেন। ১নং ওয়ার্ডে ৫ দফায় করোনার মালামাল ও টাকা বিতরণ করেননি। ট্যাক্স আদায়ে করা হয়েছে জুলুমবাজী, আইন বহির্ভূত কার্যক্রম ও আত্মসাৎ। ৭নং ওয়ার্ডে ১৬ জনের নামে ও ৩নং ওয়ার্ডে ৭ জনের, ৫নং ওয়ার্ডে ১০ জনের নামে চাল ও টাকা বিতরণ দেখিয়ে তাকে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন, ৮ জনের একবার মাল দিয়ে ২ বারের তালিকার মাল উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি যেখানে অসহায় মানুষ একবারও সবাই মালামাল পায়নি সেখানে আক্তারুলের নামে ৫ বার মালামাল দেওয়া হয়েছে ও ২৫০০ টাকার তালিকায় তার নাম আছে। রেজুলেশন ছাড়াই পাঞ্জেগানা মসজিদের কাজ করা হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার পর তিনি অপরাধ ঢাকতে আত্মসাৎকৃত ৭ টন চাল ব্যয় দেখাতে কাজ করেছেন, তাও মাত্র ৩১ হাজার টাকার কাজ করা হয়েছে। এছাড়া অপরাধ ঢাকতে অনাস্থার পর আত্মসাৎকৃত টাকা পরিষদের নামে ব্যাংকে জমা দেওয়া হচ্ছে বা হয়েছে। এব্যাপারে তারা প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন সুলতানা জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুনানী হয়েছে। আগামী সপ্তাহে লিখিত বক্তব্য ও ডকুমেন্ট গ্রহন করা হবে। প্রয়োজন হলে স্পটে যাওয়া হবে। পর্যালোচনা শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।