কালিগঞ্জ থেকে জব্দকৃত ৪৮ মেট্রিক টন সরকারি গম: ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের আদেশ
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থেকে জব্দকৃত প্রায় ৪৮ মেট্রিকটন সরকারি গম অবশেষে আদালত কর্তৃক ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত আশাশুনি ও শ্যামনগরের ৬ টি ইউনিয়নের দূর্গত মানুষের মাঝে বিতরন করার জন্য যুগান্তকারী আদেশ দেয়া হয়েছে। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান ভার্চুয়াল শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে এ মামলার পিপি (দুদক) জব্দকৃত আলামত পচনশীল হওয়ায় এর মধ্য থেকে ২/৩ কেজি নমুনা স্বরুপ রেখে বাকী সব আলমত বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহনের উক্ত আদালতে আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে উক্ত আদেশ দেন। একই সাথে এ মামলায় আটক কালিগঞ্জ উপজেলার পূর্বনলতা শানপুকুর গ্রামের আব্দুল গফফারের ছেলে মনিরুজ্জামান, দেবহাটা উপজেলার আস্কারপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে মোজাহিদুল আলম মুকুল ও শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি পরানপুর গ্রামের উপেন্দ্রনাথ মন্ডলের ছেলে ইউপি সদস্য পবিত্র মন্ডলকে জেলখানা থেকে জেল সুপার আসামীদের ভার্চুয়ালি হাজির করলে বিচারক তাদের এই মামলায় গ্রেফতারসহ আসামীদের বিরুদ্ধে হাজতী পরোয়ানা ইস্যু করেন।
এ মামলার নথি ও দরখাস্ত (পিপির আবেদন) পর্যালোচনা শেষে আদলতের বিচারক জানতে পারেন যে, গত ২৮.০৫.২০২০ তারিখে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানার এসআই হুসাইন মোঃ ইমদাদুল হক অত্র মামলায় ৮১৭ বস্তা গম (৪৭,৮৫০ কেজি) জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করেন। আলামত যেহেতু পচনশীল দ্রব্য সেহেতু তা নষ্ট না করিয়া জনকল্যানে ব্যবহার করা সমীচিন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়। বিচারক নথি পর্যালেঅচনা শেষে সম্প্রতি সুপার সাইক্লোন আম্পান ঝড়ে সাতক্ষীরায় দারুন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জবদকৃত আলামতের ব্যবহার/প্রয়োগ সুনিশ্চিত করতে ৫ কেজি নমুনা স্বরুপ রেখে বাকী গুলো আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত দূর্গত এলাকা আশাশুনি উপলোর প্রতাপনগর ও শ্রীউলা এবং শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, কৈখালী, পদ্মপুকুর ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের মানুষের মাঝে বন্টনের লক্ষ্যে জেলা পুলিশকে দায়িত্ব দেন। সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ বর্ণিত ৬ টি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত জনগনের মাঝে বন্টন শেষে আদালতকে একটি বন্টন প্রতিবেদন দাখিল করার জন্যও ওই আদেশে বলা হয়েছে। একই সাথে আদেশের অনুলিপি অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশ সুপার সাতক্ষীরা, দূর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, খুলনা ও বিজ্ঞপিপি দুদক বরাবর প্রেরন করার জন্য বলা হয়। উক্ত ভার্চুয়াল শুনানিতে এ সময় অংশ নেন দুদকের পিপি এড. মোস্তফা আসাদুজ্জামান দিলু ও জেল সুপার।
উল্লেখ্য : শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার(কাবিখা)’র ২য় পর্যায়ের কর্মসূচীর আওতায় সাধারণ ৯নং প্রকল্পের গম (খাদ্যশস্য) অবৈধভাবে পাচার করে কালিগঞ্জের মেসার্স মনিমুক্তা রাইস মিলের মালিকসহ উক্ত আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে মিলের গুদামে ৪৮ মে.টন গম গুদামজাত করে রাখে। উক্ত খাদ্য শস্য অবৈধভাবে পাচার ও গুদামজাতকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ উক্ত গম উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে রাখেন। এ ঘটনায় উক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় দুদকের উপ-পরিচালক নীল কোমল পাল বাদি হয়ে গ্রেপ্তারকৃত তিনজনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে থাানায় একটি মামলা দায়ের করেন।