তালায় হতদরিদ্রের গরু চুরি , চোর চিহ্নিত করে থানায় অভিযোগ

সাতক্ষীরার  তালা উপজেলায়, রাতের আঁধারে অভিনব কায়দায় হতদরিদ্র পরিবারের, শেষ সম্বল গরুটি গত ২৯-০৫-২০২০ তারিখে পরিকল্পিতভাবে চুরি করে নিয়ে গেছে। বিস্তারিত সূত্রে জানা গেছে তালা উপজেলা সদরে মাঝিয়ারা গ্রামে, মৃত ইসাহাক পাটোয়ারীর পুত্র মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩১) এর শেষ সম্বল গরুটি চুরি হয়ে গেছে, ভুক্তভোগী মফিজুল পাটোয়ারী বলেন, আমার থাকার মত ঘর নই, বাস্ত শিক্ষার একটি ঘরে আমি বসবাস করি, সাম্প্রতিক দেশে করোনাভাইরাস থাকাই, এখন বাইরে কাজ কাম করতে পারছিনা, তারপরও এই গরুটা কে নিয়ে অনেক আশা ভরসা করে আমি লালন-পালন করে হাঁটছিলাম আসছিলাম আমার এই গরুটির মূল্য প্রায় ৭০০০০হাজার। গরু চুরির আগের দিন, উপজেলার ঘোনা গ্রামের মোহাম্মদ গোলাম আলীর পুত্র মোঃ আব্দুস সালাম (৩৫) ও একই গ্রামের মোঃ আবদুল জব্বার ওরফে রাঙ্গা এর পুত্র, মোঃ শরিফুল ইসলাম (৪০) আমাদের প্রতিবেশীদের বাড়ির সাইকেল রেখে রাত্র আনুমানিক ১০ টার দিকে আমাদের বাড়ির ভিতরে এসে ঘোরাঘুরি করছিল. ঘোরাঘুরি বিষয়টি জানতে চাইলে তারা বলেন এমনি ঘুরতে এসেছি, পরের দিন তারা একই স্থানে সাইকেল থেকে আমাদের গোয়াল ঘরের দিকে উঁকিঝুঁকি মারছিল। গভীর রাতে আমার গোয়াল ঘরের পিছনের ব্যাড়া খুলে গরু নিয়ে গেছে আমি এখন খুব অসহায় হয়ে গেছি, আমি যাদের নামে অভিযোগ করেছি , তারাই আমার গরু চুরি করে নিয়ে গেছে, আমি ওদের নামে থানায় অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে প্রতিবেশী শ্রী  জগদীশ বিশ্বাস এর স্ত্রী শ্রীমতি বাসনা বিশ্বাস (২২) বলেন আমি ওই দুটো লোক কে দেখলে চিনতে পারবো, আগে কোনদিন ওদের আমাদের বাড়িতে দেখেনি, প্রথম দিন ও চুরির রাতের দিন সাইকেল রেখেছিল আমাদের ঘরের গায়ে আমি মনে করেছিলাম ওরা মফিজুল দের আত্মীয়, তাই আমি বেশি কথাবার্তা বলিনি। কিন্তু পরের দিন ওরা আবারো আমাদের ওখানে সাইকেল রেখে, আমাকে বলে বৌদি এত রাতে সেলাইয়ের কাজ করছেন কেন, আমি তখনই বিষয়টি দেখি ওরা গোয়াল ঘরের দিকে উঁকিঝুঁকি মারছে, তারপরে ওরা আবার ওখান থেকে চলে গেলো আমার ধারনা ওরাই এদের গরুটি চুরি করে নিয়ে গেছে, বাসনা বিশ্বাস আরও বলেন,আমাদের বাড়িতে আরো দুজন লোক সাইকেল রেখে পাশবতী খালে মাছ ধরতে আসে কিন্তু এরা তো সেই লোক গুলো না তাদের আমি চিনি, এরা তো নতুন এর আগে কখনো আসেনি  মাত্র দু’দিন আমাদের এখানে সাইকেল রাখছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের কাছে জানতে চাইলে, বলেন আমরা ১০/১২ বছর যাবৎ ওদের বাড়িতে সাইকেল রেখে মাছ ধরতে যাই, আমরা কখনও মফিজুল দের বাড়ি ভিতরে যায়নি, আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে. এই মর্মে বক্তব্য প্রদান করলেও যাদের বাড়ি সাইকেল রাখতো তারা বলেছে মাত্র দু’দিন আমাদের বাড়িতে সাইকেল রেখেছেভুক্তভোগীদের প্রতিবেশী মানিক চন্দ্র বলেন, মফিজুল অনেক গরিব মানুষ, ওদের শেষ সম্বল গরু চুরি হওয়া  অনেক ভেঙ্গে পড়েছে,যাদের নামে অভিযোগ করেছে তারাই প্রকৃত দোষী ও গরু চুরি করেছেন বলে আমার মনে হয়, কারণ ওরা এর আগে কখনো এই এলাকায় সাইকেল রাখতে আসেনি।
এলাকার সচেতন মহল মনে করেন ইতিপূর্বে বহু গরু চুরি হয়েছে অনেক এলাকা থেকে, কখনো কোন চোর শনাক্ত করা যায়নি, এবার গরু চোরের একটা চক্র সনাক্ত করা গেছে,এদেরকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বহু গরু চুরির রহস্য বেরিয়ে আসবে,এবং এলাকা থেকে  গরু চুরির মত জঘন্য কাজ বিলুপ্ত হবে বলে জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গরু চুরির বিষয়টি আমি শুনেছি, তাদের সম্পর্কে আমি আপাতত কোনো মন্তব্য করতে পারছিনা, ওই এলাকার সিনিয়র সিটিজেনদের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক আছে, ওদের সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না।মানুষ কখন পরিবর্তন হয় কখন কি করে এ বিষয়ে তো আর বলা যায় না, আসামিদের স্বভাব চরিত্র সম্পর্কে জানতে চাইলে, চেয়ারম্যান বলেন আমি তাদের স্বভাব চরিত্র সম্পর্কে কোন সঠিক মন্তব্য করতে পারছিনা।
মামলার বিষয়ে এবং বিভিন্ন তৎপরতার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই প্রীতিশ বাবু জানান, বিষয়টি আমি দেখছি তদন্ত চলছে, আগামীকাল উভয়পক্ষকে ডেকেছি, তাদের সঙ্গে কথা বলার পর  বিস্তারিত আপনাদের জানানো হবে।
বিষয়টি তালা থানার  ও সি জনাব মোঃ মেহেদী রাসেল বলেন, বিষয়টি একটা সাধারণ অভিযোগ, একজন অফিসার তদন্ত করছে, বিস্তারিত তদন্ত কতদূর হয়েছে তদন্ত কারীর সঙ্গে কথা বলে জানাবো।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)