কুল্যায় স্ত্রীকে তাড়িয়ে শশুর বাড়িতে গিয়ে হুমকী ধামকী, প্রতিকারের দাবী
আশাশুনি উপজেলার কুল্যায় স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েও খায়েশ না মেটেনি। শশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে ছিনিয়ে আনার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় নদী পার হলে মজা দেখে নেওয়ার হুমকী দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে কুল্যার বাহাদুরগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বাহাদুরপুর গ্রামের আবু হাসান, তার কন্যা নিলুফা লিখিত ভাবে জানান, আবু হাসানের কন্যা নিলুফার সাথে ১২/১৩ বছর পূর্বে বিয়ে হয় বুধহাটা গ্রামের খবির সরদারের পুত্র মিনারুলের। বিয়ের পর তাদের ঔরশে দু’টি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। অর্থ পিপাসু মিনারুল শ^শুরের দেওয়া অর্থে সন্তুষ্ট না হয়ে বারবার যৌতুক দাবী করতে থাকে। না পেয়ে নিলুফার উপর নির্যাতন শুরু হয়। মাঝে কিছু টাকা দিলেও পরান ভরেনি। ৩ বছর আগে নিলুফা স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে স্বামীর ঘরে যেতে চায়নি। তখন কৌশলে মিনারুল একটি সাদা স্ট্যাম্পে শ^শুরের স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে পরবর্তীতে নিলুফা আবারও স্বামীর ঘরে গিয়ে ওঠে। কিন্তু স্বামীর অত্যাচার কমেনি, বরং বাড়তে থাকে। ঈদের পরদিন নিলুফা পিত্রালয়ে আসে, স্বামীকে পরে আসার কথা থাকলেও আসেনি। খাওয়া দাওয়া শেষে সে স্বামীর জন্য খাদ্য খাবার নিয়ে বাড়িতে যায়। খাবার পছন্দ না হওয়ায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাছ ও মারপিট করে মঙ্গলবার রাত্র ৯ টার দিকে নিলুফাকে স্বামী বাড়ি থেকে বের করে গেটের তালা আটকে দেয়। মেয়ের কান্নাকাটির এক পর্যায়ে গভীর রাতে নিলুফার জা’ তাদেরকে ভিতরে নিয়ে বারান্দায় থাকতে দেয়। পরদিন (বুধবার) সকালে বাধ্য হয়ে নিলুফা সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বৃহস্পতিবার নিলুফার ভাই শাহিন বুধহাটা বাজারে টিন ক্রয়ের জন্য গেলে তাকে তাদের কলা’র আড়তে আটকে রেখে কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। সারাদিন আটকে রাখার পর কুল্যা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম জানতে পেরে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে ছাড়িয়ে নেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে মিনারুল শ^শুর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের চিৎকারে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামসহ গ্রামের বহু মানুষ হাজির হলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে ‘নিলুফার গর্ভে জন্ম নেওয়া সন্তান আমার নয়’ এমন অশালীন উক্তি করে, এবং যারা আমার কাজে বাধা দিয়েছে তাদেরকে বুধহাটায় পেলে মজা দেখিয়ে দেব বলে আস্ফালন করতে থাকে মিনারুল। ফলে প্রতিবেশীরা তার হুংকারে জানমালের ক্ষতির আশংকা নিয়ে ভীত হয়ে পড়েছে। এব্যাপারে ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, আমি তাকে ধৈর্যের সাথে কথা বলতে বলি, মান সম্মান সবার আছে, কারো এভাবে অসম্মানিত করোনা। কিন্তু সে সকলকে অশালীন সম্বোধন করে, নদী পার হলে দেখে নেবে বলে হুমকী দিয়ে চলে যায়। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার তোড়জোড় চলছিল।