বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন কলারোয়ার প্রথম করোনা রোগী
কলারোয়ায় শনাক্ত হওয়া প্রথম করোনা রোগী নিজ বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। ৩৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ দেখা না যাওয়ায় ও দৃশ্যমান সুস্থ-সাবলীল শারীরিক অবস্থা বিরাজ করায় তাঁকে নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এই সময় পুষ্টিকর ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। ঢাকা ফেরত ওই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়িসহ আশপাশের ৮ টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এদিকে, শনিবার দুপুরে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়িতে যেয়ে তাঁকে মানসিক দৃঢ়তা ও সাহস বাড়াতে উৎসাহ জোগান সাতক্ষীরা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, এমপি। সংসদ সদস্য তাঁকে মনোবল অটুট রাখার পরমর্শ দেন ও সব ধরনের প্রয়োজনে তাঁর পাশে থাকার কথা বলেন। শনিবার বিকেলে আক্রান্তের বাড়ি পরিদর্শন করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ, থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মুনীর-উল-গীয়াস, টিএইচও ডা: জিয়াউর রহমান, চন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম।
রোববার ওই বাড়িতে বিভিন্ন ফল-মূল নিয়ে যেয়ে রোগীর মানসিক সাহস জোগান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা: শফিকুল ইসলাম। চিকিৎসক ও প্রশাসনকে ওই করোনা রোগী শনিবার জানান, তাঁর শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট-এর কোনোটাই নেই তাঁর। নিজেকে সুস্থ ও স্বাভাবিক মনে হচ্ছে তাঁর। সেজন্য ওই ব্যক্তিকে নিজ বাড়িতে পৃথক থেকে চিকিৎসা নিতে বলা হয়। সেই সাথে ওই রোগীকে পুষ্টিকর ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দেন টিএইচও ডা: জিয়াউর রহমান। তিনি নিয়মিত রোগীর খোঁজ-খবর করার জন্য তাঁর মোবাইল ফোন নাম্বারও দিয়ে এসেছেন। বর্তমানে রোগী ভালো ও স্বাভাবিক অবস্থায় আছেন বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত. কলারোয়ায় প্রথম করোনায় আক্রান্ত মাজেদুল ইসলামের (৩৭) বাড়ি উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের দাঁড়কী গ্রামে। তাঁর পিতার নাম মরহুম রমজান আলি। তিনি ১০ মে সস্ত্রীক ঢাকা থেকে নিজ গ্রামে ফেরেন। ঢাকায় তিনি একটি বেসরকারি চাকুরি করতেন। গত ১৩ মে মাজেদুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। ১৬ মে শনিবার প্রাপ্ত রিপোর্টে মাজেদুলের পজিটিভ ও তাঁর স্ত্রীর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তবে সবকিছু মোটামুটি ঠিকঠাক মনে হলেও এলাকাবাসীর মধ্যে এ করোনা শনাক্তের ঘটনায় চাপা আতঙ্ক ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। সেটি হলো, ১৩ মে নমুনা সংগ্রহের দিন মাজেদুল ইসলামকে ডাক্তাররা বলে দেন, রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তিনি যেনো বাড়ির বাইরে না যান। কিন্তু করোনা পজিটিভ মাজেদুল ইসলাম ডাক্তারের কথা অমান্য করে স্থানীয় বাজার, চন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদসহ গয়ড়া বাজারে যান। বিভিন্ন দোকানে যান। সেখানে মানুষের সাথে মেলামেশা করেন। আর মানুষের উদ্বেগের কারণ মূলত: এটাই।