ঈদে ট্রেন চলবে
ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র ১২ কি ১৩ দিন! কিন্তু মানবশূন্য কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ২৮টি টিকেট কাউন্টার। প্রতিবছরই ঈদের ৮ থেকে ১০ দিন বাকি থাকতেই শুরু হয়ে যায় ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রির কার্যক্রম। মধ্যরাত থেকে ঘরমুখি মানুষ লাইন ধরে টিকেটের জন্য। উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে কমলাপুর রেল স্টেশনে। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে কাঙ্খিত টিকেটটি হাতে পেয়ে হাসি ফুটে উঠে টিকেট প্রত্যাশি মানুষের মুখে। শুধু রেল স্টেশনেই নয় টিকেট বিক্রির কার্যক্রম চলে অনলাইনসহ রাজধানীর একাধিক স্থানে। কিন্তু এবার সব জায়গাই এর উল্টো চিত্র। এমনকি ঈদে ট্রেন চলবে কিনা এ বিষয়েও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত হবে তাও বলতে পারছেন না দায়িত্বশীলরা।
বাংলাদেশ রেলের মহাপরিচালক মো. সামসুজ্জামান মঙ্গলবার ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, ঈদে ট্রেন চলাচলের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত হবে তাও সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি।
তবে সার্বিক সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত হলে আমরা স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাইডলাইন মেনে ট্রেন চালু করতে পারবো।
রেল ভবন সূত্রে জানা যায়, সরকার শেষ পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের অনুমতি দিলেও বিক্রি করা হবে অর্ধেক টিকেট। অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে একটি আসন বাদ দিয়ে আরেকটি আসন বিক্রি করা হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর এরইমধ্যে ট্রেন চলাচলের বিষয়ে ১৪ দফা দিকনির্দেশনা দিয়েছে। এসব নির্দেশনা মেনে ট্রেন চলাচল অনেকটাই অসম্ভব বলে মনে করছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কেননা আন্তঃনগর ট্রেনের অর্ধেক টিকেট অনলাইনে বিক্রি হলেও বাকি ৫০ শতাংশ মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেনের সব টিকেটই বিক্রি করতে হবে স্টেশন থেকে।
এতে রেল স্টেশনের ভিড় এড়ানো অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। আবার টিকেট বিক্রি অর্ধেকে নামিয়ে আনলে যাত্রী অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। যা বিঘ্নিত করতে পারে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। এদিকে ট্রেনের ভেতরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাইডলাইন যাত্রীরা কতটুকু মানবেন এ নিয়েও সন্দিহান রেল কর্মকর্তারা।
সব বিষয় বিবেচনায় রেখে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ট্রেন চলাচল করবে কিনা এ বিষয়ে রেলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও দ্বিধান্বিত বলে জানিয়েছেন রেলের অপারেশন বিভাগের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকতে পারে। কারণ সরকারের তরফ থেকে এবার যার যার অবস্থানে থেকে ঈদ উদযাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে ট্রেন চালনোর কোনো যুক্তি নেই। কারণ যাত্রী যদি না পাওয়া যায় তাহলে লোকসান গুনতে হবে রেলকে।
রেল ভবন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা ৩৫৯টি। যার মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন আছে ৯৪টি।
করোনা পরিস্থিতির কারণে সংক্রমণ রোধে গত ২৫ মার্চ থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।