রমজানে কড়া সতর্কতায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে কাজ করার পাশাপাশি রমজান মাসে যাতে দুর্বৃত্তরা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সেজন্য কড়া সতর্কতায় রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ইফতার কিংবা যাকাত প্রদানকে কেন্দ্র্র করে করোনা সংক্রমণ, বিশৃঙ্খলা কিংবা নাশকতা এমনকি ছিনতাই, রাহাজানি, প্রতারণা এবং জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের বিস্তার রোধে ব্যপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ এক ভিডিও কনফারেন্সে পুলিশ কর্মকর্তাদের এসব বিষয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক প্রান্তিক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়তে পারে। তাই অনেকে অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই বাড়তে পারে। এ ধরনের অপরাধ দমনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। কেউ যেন ধর্মীয় উস্কানি, গুজব ও করোনা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে, সে বিষয়ে তৎপর থাকতে হবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জঙ্গিরা যেন কোনোভাবেই তৎপরতা চালাতে না পারে, সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে রমজানে কঠোরভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, যেন পণ্যের মূল্য না বাড়ে। পণ্যের কালোবাজারি রোধ এবং খাদ্যে ভেজাল দেয়া বন্ধের নির্দেশ দেন তিনি।
জানা গেছে, দুর্বৃত্ত, জঙ্গি কিংবা প্রতারক চক্র সবসময়ই যেকোনো পিরিস্থিতির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করে। বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে একটি বিশেষ পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে দেশ। সড়কে যান চলাচল সীমিত, দোকানপাটসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে অনেক মানুষ তাই এরকম পরিস্থিতিতে সঙ্গত কারণেই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতি, রমজান মাস এবং আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। সেই অনুযায়ী নির্দেশ দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোকে। বিশেষ করে রমজান মাসে পোশাক কারখানাগুলোর শ্রমিকদের বেতন-বোনাসকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য শ্রমিক বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে তৃতীয় কোন পক্ষের ইন্ধন, ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও কৃত্রিম অসন্তোষ সৃষ্টি, যাকাত প্রদানকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা রোধ, ফুটপাতে ইফতার বিক্রি, সেহরি কিংবা ইফতার পার্টি ও বাজারে লোকসমাগমকে কেন্দ্র করে ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধ ও বিশৃঙ্খলা, জাল টাকা, ঈদকে কেন্দ্র্র করে মার্কেটগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকানাটা, ঈদ জামাতসহ অনেকগুলো বিষয় বিবেচনায় রেখে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি, ভেজাল পণ্য, অস্বাস্থকর ইফতার সামগ্রী বিক্রি, নিরবিচ্ছিন্ন পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাবিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন বিঘ্ন ঘটতে না পারে বিবেচনায় রাখা হয়েছে এসব বিষয়ও।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, এবার ভিন্ন পরিস্থিতির কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভিন্নভাবে সাজানো হয়েছে। তাই চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই রোধে র্যাবের অতিরিক্ত টহল টিম রমজান মাস জুড়ে মাঠে থাকছে। জঙ্গিরা যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে নজরদারির মধ্যে রয়েছে সে বিষয়টিও।