ইতিহাসে প্রথমবার তেলের দাম শূন্যেরও নিচে

করোনা সংকট শুরুর পর থেকেই সময়টা ভালো যাচ্ছে না তেলের বাজারে। সোমবার দিনটাও শুরু হয়েছিল একই রকম নিরানন্দে। তবে দেখতে দেখতেই সেটি যে ইতিহাসগড়া দুঃসময় পার করবে, তা হয়তো আন্দাজ করেনি কেউ।

এদিন বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তেলের দাম নেমে এসেছে শূন্যেরও নিচে। অর্থাৎ, আপনাকে টাকা দিতে হবে না, বিক্রেতারাই উল্টো আপনাকে টাকা দেবেন, আপনি শুধু তাদের তেলটুকু নিয়ে যান।

যুক্তরাষ্ট্রের তেলের বাজারে বহুদিন ধরেই বেঞ্চমার্ক হয়ে আছে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) মূল্য। অর্থনৈতিক মন্দা, যুদ্ধ যা-ই হোক না কেন এর দাম কখনোই অন্তত তিনশ’ শতাংশ পড়ে যেতে দেখা যায়নি। এদিন মে মাসের চুক্তিতে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১৭ দশমিক ৮৫মার্কিন ডলার থেকে কমতে কমতে দাঁড়িয়েছিল মাইনাস ৩৭ দশমিক ৬৩ ডলারে।

মার্চেন্ট কমোডিটি ফান্ডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডগ কিং বলেন, ‘আজ বিশ্বব্যাপী তেল শিল্পের জন্য এক বিধ্বংসী দিন। যুক্তরাষ্ট্রের ধারণক্ষমতা পূরণ হয়ে গেছে বা যাচ্ছে এবং বাজারে কিছু দুর্ভাগ্যজনক লেনদেন হয়েছে।’

oil\

তেল ব্যবসায়ীদের জন্য সোমবারের দিনটি ছিল সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক! কারণ মঙ্গলবার দিনের শুরুতেই আবারও শূন্যের ওপর (১ দশমিক ১০ ডলার) উঠে এসেছে তেলের দাম।

মঙ্গলবারই শেষ হচ্ছে মে মাসের চুক্তি। ফলে সবার নজর এখন জুনের চুক্তির দিকেই। আর সেখানে কিছুটা সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। এতে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ১ দশমিক ৭২ ডলার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ১৫ ডলারে। আর জুনের ডেলিভারিতে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ০.১৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২৫ দশমিক ৬১ ডলার।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা সংকটে তেলের দাম শূন্যের নিচে নেমে আসায় অন্তত একটা সত্য উন্মোচিত হয়েছে- বিশ্বব্যাপী এই প্রধান জ্বালানি পণ্যটির অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে ট্যাংক, পাইপলাইন বা সুপারট্যাংকারগুলোর ধারণক্ষমতা শিগগিরই পূরণ হতে চলেছে। বিশেষ করে পরিশোধিত তেলের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরও বেশি। প্রায় সারাবিশ্বেই লকডাউনের কারণে এর চাহিদা নেই বললেই চলে। আর দিন দিন এটি মজুতের জায়গাও কমে আসছে।

সূত্র: ব্লুমবার্গ

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)