শুধু করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত কুর্মিটোলা হাসপাতাল
আগে সমন্বিত চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হলেও এখন থেকে শুধুমাত্র করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হবে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল। সে লক্ষ্যে রোববার থেকে নতুন করে ভর্তি করা হচ্ছে না সাধারণ কোনো রোগী।
ফলে এরইমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে গাইনি, ইএনটি, সার্জারিসহ বিভিন্ন বিভাগের অপারেশন কার্যক্রম। বন্ধ হয়ে গেছে জরুরি এবং বহিঃবিভাগও। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন প্রায় অর্ধশত কিডনি ডায়ালোসিসের রোগী।
জানা গেছে, এতোদিন এই হাসপাতালে শুধুমাত্র করোনাভাইরাস সন্দেহজনক রোগীদেরকে ভর্তি করে আইসোলেশনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। টেস্ট করে যাদের করোনা পজেটিভ পাওয়া যেত তাদেরকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া হতো। কিন্তু এবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে- এখন থেকে এখানেই করোনা পজেটিভ রোগীদের চিকিৎসা দিতে হবে। ফলে আজ থেকেই সাধারণ চিকিৎসা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল ঘোষণা করায় আগামী দিন থেকে কিডনি ডায়ালাইসিস করা হবে না- এ মর্মে নোটিশ দিয়েছেন কুর্মিটোলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে সকালে রোগীরা হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. জামিল আহমেদ ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, আমরা এখনো সুনির্দিষ্টভাবে বলছি না ঠিক অমুখ তারিখ থেকে হোমোডায়ালাইসিস বন্ধ হবে। তবে করোনার ক্ষেত্রে এসব রোগীরা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। করোনা আক্রান্তদের এখানে রাখা হলে হোমোডায়ালাইসিস চালু রাখা ঠিক হবে না। তাই তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করেই ওই ইউনিটটি বন্ধ রাখা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুক কালম আজাদ বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি দিন দিন পরিবর্তন হচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়ে আমরা আতঙ্কিত নই। তবে ভবিষ্যতের প্রস্তুতির জন্যই কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালকে পুরোপুরি রেডি করা হচ্ছে।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাসটি। এখন পর্যন্ত এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৮০ হাজার ২০০ জন। মারা গেছেন ৩১ হাজার ৯০৫ জন। অপরদিকে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক লাখ ৪৬ হাজার ৩৫২ জন।
করোনাভাইরাস দেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। এখন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ জন। মারা গেছেন পাঁচ জন।