টয়লেটে মোবাইল ফোন ব্যবহারে বাড়ছে করোনার ঝুঁকি!

চারদিকেই এখন করোনার মরণ ছোবলের আতঙ্ক। বেড়েই চলেছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এমতাবস্থায় সচেতনতা খুব বেশি জরুরি। নইলে আক্রান্তের তালিকায় থাকতে পারে আপনার নামও।

জানেন নিশ্চয়ই, টয়লেটে জীবাণুদের বাস। অনেকেরই টয়লেটে মোবাইল নিয়ে যাওয়ার বদ অভ্যাস রয়েছে। জানেন কি মোবাইলের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে করোনা। তাই যদি নিজেকে করোনা থেকে বাঁচাতে চান, তবে এখন থেকেই এই অভ্যাস বাদ দিন।

আয়ারল্যান্ডের বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, কাঠ, ধাতব ও প্লাস্টিকে এ ভাইরাস দুই থেকে নয় ঘণ্টা পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। তাই বর্তমান করোনা মহামারির সময় টয়লেটে ফোন বের করার অভ্যাস ছাড়তে হবে। নিয়মিত ফোন পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেকেই দিনে গড়ে শতবারের বেশি মোবাইল ফোন স্পর্শ করেন। করোনাভাইরাস থেকে সতর্ক থাকতে সাধারণ স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মানতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে নিয়মিত ভালো করে হাত ধোয়া। পারলে হালকা গরম পানি ও সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়া। বারবার মুখে হাত দেয়া যাবে না। যেসব জিনিস নিয়মিত স্পর্শ করা হয়, তা জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।

আয়ারল্যান্ডে করোনায় আক্রান্ত রোগী সংখ্যা ২৪ ছাড়িয়েছে। দেশটির জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশটিতে প্রতি দুজনের একজন টয়লেটে মোবাইল নিয়ে যান। যারা ঘন ঘন মোবাইল স্পর্শ করতে অভ্যস্ত, তারা জনসমাগম স্থলে ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি তৈরি করেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে মোবাইল নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করার অভ্যাস করতে হবে।

ফোন নির্মাতা অ্যাপল ও স্যামসাং কর্তৃপক্ষ অবশ্য ফোন পরিষ্কারের ক্ষেত্রে কোনো ডিটারজেন্ট, অ্যালকোহল বা অ্যামোনিয়াভিত্তিক পরিষ্কারক দ্রব্য ব্যবহার করতে নিষেধ করে। অ্যাপল জানায়, অ্যারোসল স্প্রে ও ব্লিচের ক্ষেত্রে এখনো এ সমস্যা হতে পারে। তবে অ্যাপলের সাপোর্ট পেজে বেশ কিছু পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। সেখানে নতুন একটি বিভাগ যুক্ত করে কীভাবে অ্যাপল পণ্য পরিষ্কার করতে হবে, এর দিকনির্দেশনা দিয়েছে। অ্যাপলের প্রকাশ করা ওই নোট অনুযায়ী, অ্যাপল পণ্য ব্যবহারকারীরা তাদের আইফোনে ‘ক্লোরক্স ডিসইনফেকটিং ওয়াইপস’ বা একই ধরনের পণ্য ব্যবহার করতে পারেন।

স্যামসাংয়ের ক্ষেত্রেও ভেজা কাপড় ও হালকা সাবা দিয়ে ফোন পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে। তবে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। অনেক দোকানেই ফোন ও ইলেকট্রনিক যন্ত্রবান্ধব স্যানিটাইজার বিক্রি করা হয়। ফোন জীবাণুমুক্ত রাখতে এসব পণ্যেও ভরসা রাখা যায়।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের স্বাভাবিক বিবেচনা থেকেই বুঝতে হবে যে দিনে কতবার ফোন আমরা স্পর্শ করছি।

সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উইলিয়াম কিভিল বলেন, ‘আপনি হাত ধুতে পারেন, কিন্তু ফোন স্পর্শ করে মুখে হাত দিলে তা থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।’

লিভারপুল হোপ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান বায়োলজি অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেসের প্রভাষক পারপেচুয়া ইমাগে বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, ফোনে গড়ে ১৭ হাজার ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা ১০টা টয়লেট সিটের সমান।

ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় শত নিয়ম মেনে চললেও ফোন যথাযথ সুরক্ষিত না রাখলে কোনো কাজ হবে না। তাই নিজে পরিচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি মোবাইল ফোনও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট, মেট্রো ডটকো।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)