করোনাভাইরাস নিয়ে অনলাইনে ছড়াচ্ছে ভুয়া তথ্য, সতর্ক থাকুন
করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী যেন এক আতঙ্কের নাম। চীনসহ অন্যান্য দেশেও বর্তমানে ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাসটি। আর এ নিয়েই এখন চর্চা হচ্ছে সর্বত্র। অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত নানা তথ্য ও এর থেকে বাঁচার নানা পণ্য।
বিশ্ববাসীরা যেন মেতেছেন মাস্ক নিয়ে। এছাড়াও এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে আগাম সতর্কতা অবলম্বণ করতে গিয়ে প্রতারকদের ফাঁদে পড়ছেন। করোনাভাইরাসের মতোই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে গুজব। অনলাইনে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে সাইবার দুর্বৃত্তরা। জেনে নিন সেগুলো সম্পর্কে-
মাস্ক বিক্রির হিড়িক
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চীন যখন লড়াই করছে ঠিক তখনই বিশ্বব্যাপী বেড়ে গেছে মাস্কের দাম। অনলাইনে এমনকি বাজারেও মাস্ক বিক্রির হিড়িক পড়ে গিয়েছে। অনেকেই হয়ত ক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে বিশেষভাবে লিখছেন, করোনাভাইরাস যে বাঁচাবে এই মাস্ক! তবে সত্যিকার অর্থে এখনো পর্যযন্ত এমন কোনো মাস্ক আবিষ্কারই হয়নি। এজন্য অনলাইনের বিভিন্ন মিথ্যা প্রলোভনে আকৃষ্ট হবে না।
মাস্ক নিয়ে বিতর্ক
অনলাইনে অনেকেই বলছেন, এন৯৫ মাস্কটি সার্জিক্যাল মাস্কের চেয়েও ভালো মানের। এসব বিষয় পাত্তা না দেয়াই ভালো। চিকিৎসকরা স্পষ্ট করে বলেছেন, নিত্য নতুন মাস্ক ব্যবহার করলেই করোনাভাইরাস ঠেকানো যাবে না। ভাইরাসটি হাতের মাধ্যমে মুখে গিয়ে অতঃপর গলায় গিয়ে সংক্রমণের সৃষ্টি করে। আর এই ভাইরাসটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র হওয়াই এন৯৫ মাস্কের মধ্য দিয়েও সহজেই প্রবেশ করতে পারে।
ওষুধ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি
কোন ওষুধের মাধ্যমে করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকা যাবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তা না করায় ভালো। কারণ এখনো পর্যন্ত নির্দিষ্ঠ কোনো ওষুধ সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানান দেয়নি। এ কারণেই অনলাইনে যদি করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধ বিক্রি করতে দেখেন তাতে আগ্রহ পোষণ করবেন না। এছাড়াও করোনাভাইরাস প্রতিরোধী কোনো তেল বা পানীয় কিংবা প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কিত তথ্যও না ছড়িয়ে বরং নিজে ও অন্যদের সতর্ক করুন।
বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্যগুলো বর্জন করুন
বিশ্বস্ত নয় এমন অজানা কোনো পত্রিকা বা ওয়েবসাইটে প্রকাশি করোনাভাইরাস সম্পর্কিত তথ্যগুলোতে কান দেবেন না। এসব জায়গায় নানা বিভ্রান্তিকর সব তথ্য দেয়া থাকে। এতে করে আপনার নয় বরং লাভ হবে ওইসব ওয়েবসাইটের। উদ্ভট সব খবরে ব্যস্ত রেখে তারা আপনার বিভিন্ন তথ্য হাতিয়েও নিতে পারে।
ভাইরাস শনাক্তকারী মেশিন নিয়ে বিভ্রান্তি
অনলাইনে হামেশাই বিক্রি হচ্ছে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ মেশিন। এসব মন ভুলানো বিজ্ঞাপনে না মজে বরং ঠাণ্ডা মাথা চিন্তা করুন। এখনো পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কোনো মেশিন বা টেস্ট কিট বাজারে আসেনি। তাই অনলাইনে বিক্রি করা এসব পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকুন।
হোয়াটসঅ্যাপে মিথ্যা তথ্য
করোনাভাইরাস সম্পর্কিত কোনো তথ্য যদি আপনার হোয়াটসঅ্যাপে আসে তবে তাতে লক্ষ্যপাত না করায় ভালো। এমনকি কোনো টিকটক কিংবা লাইকি ভিডিওতে আস্থা রাখবেন না। এসব ভুয়া কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে সাইবার ক্রিমিনালরা।
ইউটিউবের ভিডিওতে ভরসা করবেন না
বর্তমানে বিশ্বের মানুষ করোনাভাইরাস সম্পর্কিত বিভিন্ন ভিডিও দেখলেই তাতে ক্লিক করে। এতে করে সে যেমন ভুল তথ্য জানে অন্যকেও তা জানায়। পরবর্তীতে এসব তথ্যই গুজব আকারে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। ইউটিউবের বিভিন্ন ভিডিও ও তথ্য বিভ্রান্তিকর। এজন্য অনলাইনে কোনো বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসক দাবি করা ব্যক্তির পরামর্শ মানতে যাবেন না!
করোনাভাইরাসের উপসর্গতেও গুজামিল!
একটু ঠাণ্ডা-জ্বর হলেই ভাববেন না যেন করোনাভাইরাস হয়েছে। অনলাইনে এর উপসর্গগুলো না খুঁজে বরং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
গুজব ছড়াবেন না
কারো মাধ্যমে কিছু জেনেই সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোহগাযোগ মাধ্যমে তা ঢেলে দিবেন না। এতে করে আপনি যেমন ভুল জেনেছেন অন্যরাও সেটিই জানবে। এজন্য যে কোনো তথ্যই মাথা খাটিয়ে চিন্তা করুন অতঃপর তা সবার সঙ্গে শেয়ার করুন। বিশ্বাসযোগ্য যে কোনো সূত্রের মাধ্যমে সঠিক তথ্য জানার চেষ্টা করুন।
ক্ষুদে বার্তা মোটেও ক্ষুদ্র নয়
করোনাভাইরাস সম্পর্কিত যদি কোনো তথ্য আপনার ব্যক্তিগত মেইলে আসে তবে তাতে কৌতূহল হবেন না। এগুলো সাইবার অপরাধীদের কাজ। তারা বিভিন্নভাবে হয়ত আপনার মেইল আইডিটি সংগ্রহ করেছে। যে কোনো সময় তারা আপনার সব তথ্য নিজেদের কব্জায় নিয়ে নিতে পারে।
সূত্র: গ্যাজেটসনাউডটকম