আমাকে জড়িয়ে নোংরা উক্তি মোটেও ভালো লাগছে না: শাবনূর

জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।সোমবার সকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

সালমান শাহকে হত্যার অভিযোগের কোনো ধরনের প্রমাণ মেলেনি বলেও জানিয়েছে তারা। এই আত্মহত্যার পেছনে পাঁচটি কারণ উঠে এসেছে। এরমধ্যে অন্যতম চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে সালমানের অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতা। এটিকে ঘিরে স্ত্রী সামিরার সঙ্গে সালমানের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।

এদিকে, সালমান শাহর আত্মহত্যায় তার প্রসঙ্গ আনায় অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাবনূর। একটি জাতীয় দৈনিককে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় শাবনূর বলেন, পিবিআইয়ের এমন প্রতিবেদনে আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কীসের জন্য আমার নাম জড়ানো হচ্ছে? সালমান যদি আত্মহত্যাও করে, তাহলে আমার কারণে কেন করবে? আমার নামটা জড়ানোর আগে সবারই একবার ভাবা উচিত। একজন মৃত মানুষের সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে কথা বলাটা খুব বিশ্রী মনে হয়েছে।

সালমান শাহর সঙ্গে নিজের ভাইবোনের সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করে অভিনেত্রী শাবনূর বলেন, ‘আমাকে জড়িয়ে এমন কথা কেন বলা হচ্ছে, তা আমি জানি না। সালমান ও আমাকে জড়িয়ে এই ধরনের কথা কেউ যদিও বলে থাকে, সেটার আমি ঘোর বিরোধিতা করছি। সালমান শুধুই আমার নায়ক ছিল, সহশিল্পী ছিল, বন্ধু ছিল, এর বাইরে আর কোনো সম্পর্ক ছিল না। আমি আগেও বলেছি, তাকে আমি ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করতাম। তার সঙ্গে আমার ভাইবোনের সম্পর্ক ছিল। অন্য রকম পরিচ্ছন্ন সম্পর্ক ছিল। এটা নিয়ে এখন কেউ কিছু বললে তা তো আমি মানবই না। একজন মরা মানুষকে নিয়ে এত বছর পর এত বিশ্রী কথা বলার মনমানসিকতা কীভাবে সবার হয়, সেটাও আমি বুঝি না।’

শাবনূর বলেন, ‘আমি তখন অবিবাহিত একটা মেয়ে। সালমান তো বিবাহিত। ওর স্ত্রীর সঙ্গেও আমার একটা ভালো সম্পর্ক ছিল। সালমানের স্ত্রী সব সময় আমাদের সঙ্গেই থাকত। প্রেমের সম্পর্কের কিছু একটা যদি হতো, এটা তখন সবাই বুঝতে পারত। এত বছর পর এই ব্যাপারটা নিয়ে আমাকে জড়িয়ে নোংরা উক্তি করার ব্যাপারটি মোটেও ভালো লাগছে না। কিছু মানুষ আমাকে জড়িয়ে গুজব ছড়িয়েছে। এখনো ছড়াচ্ছে।’

সালমান শাহকে নিয়ে শাবনূর এর আগে বিভিন্ন টিভি টকশো ও সংবাদ মাধ্যমে একাধিকবার বলেছেন, সালমানের কোনো বোন ছিল না। তাই সে আমাকে তার ছোট বোন হিসেবেই দেখত। আমাকে সে ‘পিচ্চি’ বলে ডাকত। বলতো-‘এই পিচ্চি এই দিকে আয়’।

শাবনূর বলেন, সালমানের মা-বাবাও আমাকে খুবই আদর করতেন। সালমানের কারণে তাঁরা আমাকে তাঁদের মেয়ে হিসেবেই দেখতেন। সালমান যেহেতু আমাকে ছোট বোনের মতো দেখত, আমিও তাকে সেভাবেই সম্মান করতাম। তবে আমাদের মধ্যে কিন্তু বন্ধুত্বপূর্ণ একটা সম্পর্কও ছিল। সালমানের বউ সামিরাও কিন্তু আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সালমান নাচ একটু কম পারত। সে তুলনায় আমি নাচে বেশি পারদর্শী ছিলাম। সালমান আমাকে প্রায়ই বলত, “আমাকে একটু নাচ দেখিয়ে দে তো।” আমিও আগ্রহ নিয়ে কাজটা করতাম। সালমান অনেক বড় মনের মানুষ। বয়সে বড় সবাইকে সে যথেষ্ট সম্মান করত। কোনো অহংকার তার মধ্যে ছিল না। অনেক বেশি ভালো ছিল। সহশিল্পীদের সবার প্রতি খুব আন্তরিক আর কাজপাগল একটা ছেলে ছিল। আমাদের দুজনের বোঝাপড়াটা ছিল চমৎকার। বলতে পারেন, একে অন্যের চোখের ইশারা বুঝতে পারতাম।’

সালমানের মৃত্যুসংবাদ যেভাবে পান শাবনূর। শাবনূর বলেন, ‘সালমানের মৃত্যুসংবাদটা যখন পাই, তখন আমি বাসায় ছিলাম। হঠাৎ কে যেন ফোন করে জানায়, সালমান শাহ মারা গেছে। আমি উল্টো ধমক দিয়ে বলি, কী বলো এসব? আমার ছোট বোন বাইরে গিয়ে সালমানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়ে আসে। আমি তখন পুরোপুরি হতবাক হয়ে যাই। এরপর এফডিসিতে সালমানকে দেখতে যাই।’

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)