‘একে তো তীব্র শীত, তার ওপর আবার বৃষ্টি, জনজীবনে অস্বস্থি
একে তো তীব্র শীত, তার ওপর আবার বৃষ্টি। দু’য়ে মিলে স্বাভাবিক কাজকর্ম যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। নানান কষ্ট আর দুর্ভোগেই কাটলো গোটা দিন’। হাড় কাঁপানো শীত আর বৃষ্টিতে দিনভর নানান ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পাটকেলঘাটা বাসীর। পৌষে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। তার সঙ্গে শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) ভোর রাত থেকে বৃষ্টি আর ঠান্ডা বাতাস শীতের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ। এদিন তাপমাত্রা খুব একটা নিচে না নামলেও কনকনে ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। বৃষ্টি যেন তার প্রতাপে পূর্ণতা এনে দিয়েছে।
দিনভর কোথাও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। হিমালয় ছুঁয়ে আসা ঠান্ডা বাতাস কাঁপিয়ে তুলছে ছিন্নমূল মানুষগুলোকে। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে পথ-ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে বিছিন্ন ভাবে থাকা ছিন্নমুল মানুষগুলো দুর্বিষহ দিন পার করছেন। পৌষের শেষের দিকে এসে পাটকেলঘাটা অঞ্চলে এখন চলছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। আর তাই প্রচন্ড শীতে এমনিতেই কাবু এ অঞ্চলের মানুষ। এরই মধ্যে ভোর থেকে ভারী আর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়। ফলে শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে।
প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। আর এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া খেটে খাওয়া মানুষ। পাটকেলঘাটা বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকে। নিত্য প্রয়োজনীয় দোকানীরা নিত্যন্ত নিরুপায় হয়ে দোকান খুলে বসে। পাটকেলঘাটা পাঁচ রাস্তা মোড়ের ভ্যান চালক আফসার আলী জানান, খুব সকালে তিনি যখন ভ্যান নিয়ে বের হন, তখন কুয়াশার মধ্যে ফোটা ফোটা পানি পড়ছিল। তিনি ভেবেছিলেন, শিশির পড়ছে।
তাই বৃষ্টির কোনও প্রস্তুতি নেননি। খানিক বাদেই যখন বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ে, তখন তিনি বুঝতে পারেন এ গা হিম করা পৌষের বৃষ্টি! এখন পেটের দায়ে বৃষ্টিতে ভিজেই ভ্যান চালাতে হচ্ছে তাকে। এলাকার বাজার গুলোতে মানুষজন ছিল হাতেগোনা। সাধারণ মানুষর বেশির ভাগই ঘরে ছিলেন। বৃষ্টি আর কনকনে ঠান্ডায় মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিও কাহিল হয়ে পড়ে। ইটভাটায় হাজার হাজার কাঁচা ইট পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।
এতে প্রচুর টাকার ক্ষতি হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তা দীলিপ কুমার বলেন, এ অবস্থা দুই-তিন দিন অব্যাহত থাকলে এবং জমিতে পানি জমলে আলু, পেঁয়াজসহ শীতকালীন শাকসবজির ক্ষতি হতে পারে। তবে এই বৃষ্টিতে গম, ভুট্টা ও বোরো বীজতলার উপকার হয়েছে।
এলাকায় দেখা গেছে লোকজন বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাতে ছাতা নিয়েএবং মাথায় বস্তা-পলিথিন বেঁধে হাটে উপস্থিত হয়েছেন। গ্রাম ডাক্তার সুপ্রদাশ মজুমদার ও সুমন চক্রবর্তি বলেন, শীতে বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আরও কমে যায়, এ সময় শিশুদের গরম কাপড় ব্যবহার, বাসি ও ঠান্ডা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।