দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত গরম কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের ভিড়

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট সহ১০উপকুলীয়  জেলায় তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত গরম কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।পৌষ মাসের প্রথম থেকে ঠাণ্ডার প্রকোপ বেড়েই চলেছে।

প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষরা শীতে কাতর হয়ে পড়েছেন এখনই। আর শীত নিবারণের জন্য কম দামে শীতবস্ত্র কিনতে তারা যাচ্ছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে।ফুটপাতের বিভিন্ন দোকানে ক্রেতাদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। এদিকে প্রচন্ড শীতের কারনে শিশু এবং বয়স্কদের বিভিন্ন প্রকার অসুখ দেখা দিয়েছে। গৃহ পালিত পশুর দারুণ কষ্টের পাশা-পাশি খামারিরাও পড়েছেন চরম বিপাকে। সেই সাথে দুঃস্থ্য শীতার্ত মানুষের দূভোগ বাড়ছে চরম ভাবে। সরকারি ভাবে কিছু শীত বস্ত্র বিতরণ করা হলেও সেটা খুব সামান্য। ফলে বেসরকারী এবং বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন, এসব শীতার্ত মানুষ।এদিকে, খুলনাসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় মৃদু শৈত্য-প্রবাহ ‘পরশ’ জেঁকে বসতে শুরু করছে। উত্তরে হিমেল হাওয়া এবং ভারি কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে বছরের প্রথম শৈত্য-প্রবাহের পরশ নিতে যাচ্ছে দেশ। এসময় রাতের ও দিনের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।

শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীতের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছে অনেক শ্রমজীবী। শীতবস্ত্র না থাকায় অনেকে রাত জেগে খড়-কুটো যোগাড় করে আগুন জ্বেলে রাত পার করার চেষ্টা করছে।  এ অবস্থা জেলার অধিকংশ এলাকায়। প্রচন্ড শীতে শিশু ও বৃদ্ধরা হাপানী, ব্রস্কাইটিস, নিউমোনিয়া, সর্দিজ্বর, সাইনোসাইটিস, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
সিড়র-আইলা বিধ্বস্ত হাজার হাজার পরিবার প্রচন্ড শীতে অবর্ণনীয় কষ্টে রয়েছে। এসব এলাকার মানুষের মাঝে গরম কাপড় পৌছায়নি বললেই চলে। উপকূলীয় অঞ্চলে যাতায়াত ব্যবস্থা দুর্বল বলে এসব অঞ্চলের খবর রাখেনা অনেকেই। এবার শীতে অতিতের চেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে সাধারণ মানুষ।আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকেদক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট ,খুলনাসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় মৃদু শৈত্য-প্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল থেকে দিনের বিভিন্ন সময় উত্তরে হাওয়া প্রবাহিত হতে থাকে। কুয়াশা এবং ধোঁয়াশার কারণে দিনের আলো কিছুটা কম দেখা গেছে। ফলে গতকালও খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোরেও শীত জেঁকে বসতে শুরু করে। গতকাল খুলনার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সাতক্ষীরায় ১৫.৫, যশোরে ১১.৮, বাগেরহাটে ১৬.৪ এবং চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এসময় দিনের বেলা আকাশে উজ্জ্বল সূর্যের কিরণ ৩ থেকে ৫ ঘন্টা পাওয়া যেতে পারে ও ম্লান সূর্যের কিরণ ৩ থেকে ৪ ঘন্টা পাওয়া যেতে পারে। এ অবস্থা আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে পারে। শৈত্য-প্রবাহ চলাকালীন সময়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি পর্যন্ত নামতে পারে। তবে রাজশাহী, রংপুর বিভাগের সকল এলাকা ও খুলনা বিভাগের উত্তর-পশ্চিম দিকের জেলা চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, নড়াইল এবং যশোর এলাকায় শীতের তীব্রতা কিছুটা বেশি থাকতে পারে। এসময় দেশের নদী অববাহিকায় কুয়াশা এবং ধোঁয়াশার পড়তে পারে।

সূত্রমতেম, তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। শৈত্যপ্রবাহে দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। হতদরিদ্ররা খরকুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করেছে। সরকারিভাবে সামান্য কিছু কম্বল বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগন্য। সন্ধ্যা নামার আগেই ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে গোটা উপকুলীয় জনপদ। শীতের সাথে ঠাণ্ডা বাতাসে নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষজন পড়েছে চরম দুর্ভোগে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)