শীতের প্রথম দিন আজ

আজ বঙ্গাব্দ ১৪২৬-এর শীত ঋতুর প্রথম দিন! শিশিরভেজা নতুন সকালে আনুষ্ঠানিক সূচনা হলো। গতকাল বিদায় নিয়েছে হেমন্ত। ঋতুর পরিবর্তনে পৌষ আর মাঘ মাস শীতকাল। পঞ্জিকার হিসাবে আজ শীতের শুরু হলেও ক’দিন ধরেই হিমেল হাওয়ার ঝাপটা আর ঘন কুয়াশা জানান দিচ্ছিল শীতের আগমনীবার্তা। প্রবল শীত থেকে জীবন বাঁচাতে অতিথি পাখিরা বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে তারও আগে থেকে।

পৌষের শুরু থেকেই কুয়াশার হালকা স্তর গভীর ও ধূমায়িত হয়ে আচ্ছন্ন করে তোলে দিকচক্রবাল। রাতভর ঝরে পড়া শিশিরে ভিজে ওঠে ঘাস, লতাপাতা, ঘরবাড়ির টিনের ছাউিন। ঘাসের ডগায়, পাতার কিনারে জমে থাকা স্বচ্ছ শিশিরবিন্দুতে ভোরের সোনািল রোদের স্পর্শ ছড়িয়ে দেয় বড়ই মনোহর দ্যুতি। মুক্তোদানা বা হীরার কুচির সঙ্গে লোকে তার শোভার তুলনা করে আসছে বহুকাল থেকে। আর শীতের এই রোদ কতই না আদরণীয়—‘মিঠে রোদ’, ‘সোনা রোদ’ ভালোবেসে দেয়া এমন সব তার নাম।

শীত নিয়ে নানা বন্দনা রয়েছে বাংলা সাহিত্যে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘শীতের হাওয়ার লাগল নাচন আম্লকির এই ডালে ডালে…’, ‘পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে, আয় রে চলে আয় আয় আয়…’।

শীতকালে ফোটে বহু ধরনের বাহারি ফুল। শীতের বিবর্ণ পরিবেশে এসব ফুল বর্ণিল রঙ ছড়িয়ে মানুষের কাছ থেকে আদায় করে নেয় বিশেষ সমাদর। মাঠের পর মাঠ ভরা শিম, কপি, গাজর, টমেটো, মটরশুঁটি, বরবটি, বেগুন, টমেটো প্রভৃতির আবাদ। আর সরিষার কথা বলতে হবে আলাদা করেই। পিঠাপুলি, অতিথি আপ্যায়ন, যাত্রাপালায় গ্রামীণ জনপদে নির্ভার আনন্দের তরঙ্গ বয়ে যায়।

আমাদের দেশে তুষার পড়ে না। তবু শীতের শুষ্ক রুক্ষতা মৃত্যুর সঙ্গে তুলনীয়। গাছে গাছে মলিন, বিবর্ণ হয়ে আসে পাতা। ফেটে ঝরে পড়ে বাকল। অথচ এই রুক্ষ প্রকৃতিই ফুটিয়ে তোলে রক্তলাল গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়া, মল্লিকাদের। এত রঙিন ফুলে ভরা মালঞ্চ শীত ছাড়া কার আছে আর!

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)