আশাশুনির সম্পত্তি ও মৎস্য ঘের রক্ষার দাবীতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
আশাশুনির আব্দুল মান্নান ও লাকি বাহিনীর হাত থেকে সম্পত্তি ও মৎস্য ঘের রক্ষার দাবীতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের মহিষকুড় গ্রামের মৃত রেজাউল ইসলামের ছেলে মনিরুল কবির।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার দাদা মৃত নেছার উদ্দীন মোল্লা জীবিত থাকা অবস্থায় তার সমুদয় সম্পত্তি তাহার চার পুত্রের মধ্যে সমান ভাবে ভাগ করে দেন। আমার দাদার মৃত্যুর পর আমার বাবাসহ চাচারা আমার ফুফুদের অংশসহ শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করিয়া আসছিলেন।
এরপর ২০০৯ সালের ৩০শে জানুয়ারি আমার বাবা রেজাউল করিম মৃত্যুবরণ করেন। বাবার মৃত্যুর পর আমার চাচা মান্নান গংরা আমাকে ফাঁকি দিয়ে আমার ও আমার ফুফুদের জমি আত্মসাৎ করার জন্য নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের মে মাসে আমার দখলীয় এওয়াজ সম্পত্তি ৫ একর ৫ শতাংশ জমির মধ্যে আমার ও ৬ ফুফুর ৩ একর ৫১ শতাংশ এবং অবশিষ্ট আমার চাচা আব্দুল মান্নানের অংশ। উক্ত অংশের পরিবর্তে আমার চাচা আব্দুল মান্নান গংরা আমার ও ৬ ফুফুর অংশের শ্রীউলা মৌজায় ২ একর ৩১ শতাংশ জমি ভোগ দখল করে। এরপরও আমার চাচা মহিষকুড় মৌজায় আমার এওয়াজ মূলে দখলীয় ৫ একর ৫ শতাংশ জমি জোর পূর্বক দখল নেওয়ার চেষ্টা করে এবং আমাদের উপর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে একাধিকবার হামলা করে। এরই প্রেক্ষিতে আমি আদালতে মামলা করি। আদালত উক্ত জমির উপর ১৪৫ ধারা জারি করে। এর আগে আশাশুনি থানায় আমি লিখিত অভিযোগ করি।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৩০/০৬/১৯ ইং তারিখে থানায় বসে উভয় পক্ষের সম্মতিতে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে যার অবস্থানে থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ২০২০ সালে মৌজা অনুযায়ী যে যার অংশ শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে বণ্টন করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু গত ১১/১১/১৯ ইং তারিখে মহিষকুড় মৌজায় আমার নিজ দখলীয় ১৫ বিঘা ৫ শতক জমির মৎস্য ঘেরে রাতের আধারে আমার চাচা আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে আশাশুনির লাকি বাহিনীর সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা করে।
এ সময় উক্ত সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমার ঘের থেকে মাছসহ নগদ ১০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। আমি এর প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে খুন জখম করার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এরপর আমি গত ১২/১১/১৯ তারিখে আশাশুনি থানায় লিখিত আবেদন করলে পুলিশ তদন্তে যাওয়ায় আমার চাচা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে লাকি বাহিনীর দ্বারা গত ১৫/১১/১৯ইং তারিখে ভোর রাতে আবারও আমার মৎস্য ঘেরে হামলা করে মাছ লুট করলে আমি থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই তারা আমাকে হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায়।
এ সময় এ.এস.আই মিলন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে থানায় গিয়ে রিপোর্ট দেয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু দু:খের বিষয় ঘটনার প্রায় এক মাস অতিবাহিত হলেও আজ অবধি মান্নান ও লাকি বাহিনীর বিরুদ্ধে পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি আরো বলেন, লাকি বাহিনী এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় হত্যা, রগ কাটা মামলাসহ একাধিক লুট-পাট ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। তারা বর্তমানে আমাকে ও আমার পরিবারকে হুমকি ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এমতাবস্থায় তিনি তার নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আব্দুল মান্নান ও লাকি বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।