‘মাদক নয়, স্বপ্নের ভবিষ্যৎ গড়বো ক্রিকেটে’
‘‘মাদক নয়, স্বপ্নের ভবিষ্যৎ গড়বো ক্রিকেটে’’ এই স্লোগানে দেশেজুড়ে চলছে PKCSBD ক্রিকেট ট্যালেন্ট হান্ট কার্যক্রম। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুমোদন ও সার্বিক সহযোগিতায় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় প্রোগ্রামটি বাস্তবায়ন করছে ট্যালেন্ট স্পোর্টস লিমিটেড। সারাদেশের ৮ বিভাগের ৬৪ জেলার ৪৯২টি উপজেলায় একযোগে চলছে উপজেলা ও জেলা রাউন্ডের ট্যালেন্ট বাছাই। জেলা রাউন্ড শেষে বিভাগ ও জাতীয় রাউন্ডের ট্যালেন্ট বাছাইয়ের মাধ্যমে শেষ হবে এই কার্যক্রম।
ইতিমধ্যে প্রত্যেক বিভাগের কিছু জেলায় উপজেলা ও জেলা রাউন্ড কার্যক্রম শেষ হয়েছে। চলমান রয়েছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, চাঁদপুর, বরিশাল, ময়মনসিংহ, বগুড়া, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী, সিলেটসহ আরো বেশ কিছু জেলায়।
বিপিএলের চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জারস এর ম্যানেজার জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ফাহিম মুন্তাসির রহমান সুমিত যিনি দেশব্যাপী PKCSBD ট্যালেন্ট হান্ট কার্যক্রমের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ট্যালেন্ট স্পোর্টস লিমিটেডের পরিচালক, দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিনিধিকে জানান, বিগত সময়ে গ্রামীণ ফোন ও রবির ট্যালেন্ট হান্ট থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট ভালো কিছু ক্রিকেটার পেয়েছিল তবে ধারাবাহিকতা থাকলে হয়তো আরো ভালো ক্রিকেটার পাওয়া যেত। তবে চলমান PKCSBD ট্যালেন্ট হান্ট কার্যক্রমে কয়েকটি জেলা থেকে অনেক ভালোমানের বেশকিছু ক্রিকেটার পেয়েছি যাদের নার্সিং করলে বড় প্লাট ফর্মে খেলানো সম্ভব। আরো অনেক জেলার কাজ চলমান, সব জেলার শেষে হয়তো আরো বেশি ট্যালেন্ট পাওয়া যাবে।
আশাকরি এই ট্যালেন্ট হান্টের বিভাগীয় এবং জাতীয় রাউন্ড শেষে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে চমকপ্রদ কিছু ক্রিকেটার দিতে পারবো। সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন ও প্রতিভা বিকাশের পর্যাপ্ত সুযোগের অভাবে উপজেলা পর্যায়ে তৃণমূল থেকে প্রতি বছর অনেক প্রতিভাবান ক্ষুদে ক্রিকেটার ঝড়ে পড়ছে। সে বিষয়গুলো মাথায় রেখে ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে এই ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রতিটি উপজেলায় ক্রিকেট একাডেমি গড়ে তোলা হবে যেখানে সারা বছর আগ্রহী ক্ষুদে ক্রিকেটাররা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সকল ফরমেটে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। ক্ষুদে ক্রিকেটার থেকে পরিণত ক্রিকেটার হওয়ার জন্য এই কার্যক্রমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাবেক ক্রিকেটারদের সমন্বয়ে সিলেকশন প্যানেল তৈরি করা হয়েছে যারা PKCSBD ট্যালেন্ট হান্টের প্রতিটি রাউন্ডে কাজ করবে।
দেশব্যাপী PKCSBD ক্রিকেট ট্যালেন্ট হান্ট বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ট্যালেন্ট স্পোর্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল মাহমুদ সৈকত দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিনিধিকে জানান, সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের ক্রিকেট ট্যালেন্ট হান্ট বিষয়ে অবহিত করার পাশাপাশি ছাত্রদেরকে মাদকবিরোধী সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছি। দেশব্যাপী এই ক্যাম্পেইন সরকারের চলমান মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে অনেকাংশে সহায়ক হবে। বর্তমানে ট্যালেন্ট হান্ট-১ম পর্ব প্রোগ্রাম চলমান। প্রতিবছর একবার করে মোট বারটি ট্যালেন্ট হান্ট, ১২ বছর মেয়াদী ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রোগ্রামটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রতিবছর জাতীয় পর্যায়ে উত্তীর্ণদের পূর্ণ-প্রোফাইলসহ নামের তালিকা, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)’র মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)’র কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ক্রিকেট লেভেলের সকল পর্যায়ের নির্বাচক, শুভাকাঙ্খী, ক্রিকেট ক্লাব ও দেশবাসীর সুদৃষ্টি আকর্ষণের জন্য উক্ত নামের তালিকা দেশীয় সকল ইলেক্ট্রিক মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশ করা হবে। উত্তীর্ণদের ক্রিকেটের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত রাখার জন্য দেশের প্রত্যেক উপজেলা, জেলা স্টেডিয়ামে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ, ম্যাচ পর্ব পরিচালনা ও ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হবে যাতে করে প্রতিভাবান ক্ষুদে ক্রিকেটাররা পরিণত ক্রিকেটার হওয়ার সুযোগ পায় এবং বিসিবির জেলা, বিভাগীয় কোচদের সঙ্গে যোগাযোগ বা সেতুবন্ধন তৈরি করে দেওয়া ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার নজরে নিয়ে আসা সম্ভব হয়।
দীর্ঘমেয়াদী এই প্রোগ্রামটি প্রতিটি ইউনিয়নে ও উপজেলায় নতুন ক্রিকেটার তৈরির প্রক্রিয়ার জন্য বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এবং প্রতিবছর উপজেলা থেকে পর্যায়ক্রমে ট্যালেন্ট বাছাই করে জাতীয় পর্যায়ে আনা হবে তাই এই প্রজেক্টটি সর্বাঙ্গীকভাবে ফলপ্রসু হওয়ার পাশাপাশি তৃণমূলে ক্রিকেটের নতুন জোয়ার তৈরি হবে এমনটাই প্রত্যাশা ক্রিকেট গবেষকবৃন্দ, শুভাকাঙ্খী, আয়োজক প্রতিষ্ঠানসহ সর্বমহলের।