একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি বিজয় সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি বিজয় সরকারের ৩৪তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ। উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই চারণ কবি নামেও পরিচিত। ১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মারা যান। ভারতে চিকিৎসাকালীন সময়ে মৃত্যুর পর বিজয় সরকারকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ায় সমাহিত করা হয়।
১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী নড়াইলের বাঁশগ্রাম ইউপির ডুমদি গ্রামে জন্ম নেন তিনি। তার বাবার নাম নবকৃষ্ণ অধিকারী ও মাতার নাম হিমালয় অধিকারী। দশ ভাইবোনের মধ্যে বিজয় সরকার ছিলেন সবার ছোট।
বাংলাদেশের কবি গানের উৎকর্ষ সাধনে তার অবদান অসামান্য। গ্রামবাংলার মানুষের হৃদয়ের আকুতিকে তিনি চমৎকার সুর ব্যঞ্জনায় ফুটিয়ে সাধারণ মানুষের অন্তরে ঠাঁই নিয়েছিলেন। প্রচারবিমুখ ও নিভৃতচারী এই সংগীত সাধক আসরের প্রয়োজনে মঞ্চে বসে গান লিখে ও সুর দিয়ে তাৎক্ষণিক তা পরিবেশন করতেন। জীবদ্দশায় তিনি মুক্তিযুদ্ধের গানসহ ১৮০০ বেশি গান লিখেছেন তিনি। আসল নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সঙ্গীত ও অসাধারণ গায়কী ঢঙের জন্য তিনি সরকার উপাধি লাভ করেন।
১৯২৯ সালে তিনি কবি গানের দল গঠন করেন। ১৯৩৫ সালে কলকাতার অ্যালবার্ট হলে কবি বিজয় সরকারের গানের আসরে উপস্থিত ছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লী কবি জসিম উদ্দিন, কবি গোলাম মোস্তফা, শিল্পী আব্বাস উদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ। তার গানে মুগ্ধ হয়ে তাকে আর্শীবাদ করেন।
১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কলকাতার “ ভারতীয় ভাষা পরিষদ” তাকে সংবর্ধিত করেন। এ অনুষ্ঠানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান ডক্টর আশুতোষ ভট্টচার্য, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর দেবীপদ ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন।
তিনি একাধিকবার ড. মো. শহিদুল্লাহ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, দার্শনিক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, বিশ্ব নন্দিত চারুশিল্পী এসএম সুলতানসহ অসংখ্য গুনীজনের সান্নিধ্য লাভ করেন।
শিল্পকলায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে পান তিনি। কবির মৃত্যুবার্ষিকীতে নড়াইলে ধর্মীয় আরাধনা, প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি, স্মরণসভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।