যে পরীক্ষায় ৫ বছর আগেই জানা যাবে স্তন ক্যানসার

আপনি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত কি না তা লক্ষণ প্রকাশের আগেই জানা যাবে। লক্ষণ দেখা দেয়ার প্রায় পাঁচ বছর আগেই এবার শনাক্ত করা সম্ভব স্তন ক্যানসারের উপস্থিতি। শরীরে স্তন ক্যানসারে অস্তিত্ব জানার জন্য একটি রক্ত পরীক্ষাই যথেষ্ট।

নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা তাদের সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রকাশ্যে এনেছেন এমনি তথ্য।

তাদের মতে, শরীরে স্তন ক্যানসারে অস্তিত্ব জানার জন্য একটি রক্ত পরীক্ষাই যথেষ্ট। এই রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যাবে, টিউমার কোষের দ্বারা উৎপাদিত পদার্থের প্রতি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক কতটুকু কাজ করবে ও ক্যানসার ঠেকাতে পারবে কি না।

এমনিতে ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলি শরীরে এমন প্রোটিন (অ্যান্টিজেন) তৈরি করে যা শরীরকে তাদের বিরুদ্ধেই কিছু অ্যান্টিবডি (অটোঅ্যান্টিবডি) তৈরি করতে প্ররোচিত করে। এই অ্যান্টিজেনগুলি শরীরে রক্তের মধ্যে সঞ্চালিত থাকে।

গবেষকদের মতে, এই টিউমার অ্যাসোসিয়েটেড অ্যান্টিজেনগুলি (টিএএ) ক্যানসারের শঙ্কা জানাতে পারে অনেকটাই। এই অ্যান্টিজেনগুলি যে প্যানেল তৈরি করে, সেগুলি কোনও ভাবে স্তন ক্যানসারের সঙ্গে জড়িত কিনা রক্ত পরীক্ষায় জানা যাবে তা।

আবার এই রক্ত পরীক্ষাই জানান দেবে, শরীর থেকে নেওয়া রক্তে কোনও অটোঅ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে কি না। এই দুই সূচকের উপর নির্ভর করেই লক্ষণ দেখা দেওয়ার অনেক আগেই শরীরে স্তন ক্যানসারের উপস্থিতি নির্ণয় করা সম্ভব বলে মত গবেষকদের।

পরীক্ষা চলাকালীন ৯০ জন স্তন ক্যানসার আক্রান্ত রোগী ও ৯০ জন সুস্থ মানুষের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন গবেষকরা। এই দুই প্রকার রক্তের নমুনা নিয়ে স্ক্রিনিং প্রযুক্তির (প্রোটিন মাইক্রোয়ারে) দ্বারস্থ হন গবেষকরা।

গবেষণায় দেখা যায়, স্তন ক্যানসারে সঙ্গে সম্পর্কিত ৪০ টিএএ-র বিরুদ্ধে অটোঅ্যান্টিবডির উপস্থিতির জন্য ক্যানসার আক্রান্তদের রক্তের নমুনাকে স্বল্প বিরতিতে বারংবার পরীক্ষা করতে সক্ষম হচ্ছে এই স্ক্রিনিং প্রযুক্তি। আবার ক্যানসার আক্রান্ত নয় এমন রক্তের নমুনাকে অত বার পরীক্ষা করার দরকারই পড়ছে না। প্রায় ৮০-৮৫ শতাংশ নির্ভুল তথ্য ধরা পড়ছে।

এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি গ্লাসগোয় আয়োজিত এক সমাবর্তনে স্কুল অব মেডিসিনের ছাত্র ও এক দানিয়া আলফাতানির মতে, এই পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, টিউমারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অ্যান্টিজেনগুলির প্যানেলের বিরুদ্ধে শরীর অটোঅ্যান্টিবডিগুলিকে বিক্রিয়া করতে প্ররোচিত করে।

এর মাধ্যমেই বোঝা যায় কার রক্তে কতটা অটোঅ্যান্টিবডি রয়েছে অবং কার রক্তে কতটা সফল ভাবে তা অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে কাজ করছে। ফলে তিনি ভবিষ্যতে ক্যানসারে আক্রান্ত হবেন কি না, তা অনেকটা নির্ভুল ভাবে বোঝা যায়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)