জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন যারা
অবশেষে জানা গেল ২০১৭ ও ২০১৮ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ীদের নাম। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশ করেছে।
ঘোষণা অনুযায়ী ২০১৭ সালে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন এটিএম শামসুজ্জামান ও সালমা বেগম সুজাতা। ২০১৮ সালের আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন এম এ আলমগীর ও প্রবীর মিত্র।
২০১৭ সালের সেরা চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ‘ঢাকা অ্যাটাক’। এই ছবির নায়ক আরিফিন শুভ’র অভিনয়কে স্বীকৃতি দিয়েছে জুরিবোর্ড। এর ফলে প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতলেন শুভ। একই সঙ্গে যৌথভাবে ২০১৭ সালের সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন শাকিব খান। হাসিবুর রেজা কল্লোল পরিচালিত ‘সত্তা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য এ পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি।
অন্যদিকে ২০১৮ সালে সেরা চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ‘পুত্র’। এই সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন নায়ক ফেরদৌস। পাশাপাশি যৌথভাবে সেরা অভিনেতা হয়েছেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘জান্নাত’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য এ পুরস্কার পান তিনি।
২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ নির্মাতা নির্বাচিত হয়েছেন বদরুল আনম সৌদ (গহীন বালুচর), ২০১৮ সালের শ্রেষ্ঠ নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক (জান্নাত)।
২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্যচিত্রের জন্য পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিশ্ব আঙিনায় অমর একুশে)। ২০১৮ সালে শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্যচিত্রের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন ফরিদুর রেজা সাগর (রাজাধীকার রাজ্জাক), শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য ত্রের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইউস্টিটিউট (গল্প সংক্ষেপে)।
২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা (চলচ্চিত্র হালদা), পার্শ্ব অভিনেত্রী যুগ্মভাবে সুবর্ণা মোস্তফা ও রুনা খান। ২০১৮ সালের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী জয়া আহসান (চলচ্চিত্র দেবী)। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব সুচরিতা (চলচ্চিত্র মেঘকন্যা)।
২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা মোহাম্মদ শাহাদত হোসেন (চলচ্চিত্র গহীন বালুচর)। ২০১৮ সালের শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা আলী রাজ (চলচ্চিত্র জান্নাত)।
২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ খল অভিনেতা জাহিদ হাসান (চলচ্চিত্র হালদা), ২০১৮ সালের খল অভিনেতা সাদেক বাচ্চু (চলচ্চিত্র একটি সিনেমার গল্প)।
২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা এম ফজলুর রহমান (চলচ্চিত্র গহীন বালুচর), ২০১৮ সালের শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা যুগ্মভাবে মোশাররফ করিম ও আফজাল শরিফ (চলচ্চিত্র কমলা রকেট ও পবিত্র ভালোবাসা)।
২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী নাইমুর রহমান আপন (চলচ্চিত্র ছিটকিনি), শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী বিশেষ শাখায় অনন্যা সামায়েল (চলচ্চিত্র আঁখি ও তার বন্ধুরা)। ২০১৮ সালের শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী ফাহিম মুহতাসিম লাজিম (চলচ্চিত্র পুত্র), শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী বিশেষ শাখায় মাহামুদুর রহমান অনিন্দ (চলচ্চিত্র মাটির প্রজার দেশে)।
২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক এম ফরিদ আহমেদ হাজরা (ফরিদ আহমেদ) (চলচ্চিত্র তুমি রবে নীরবে), শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক ইভান শাহারিয়ার সোহাগ (চলচ্চিত্র ধ্যাততেরিকি)। ২০১৮ সালের শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক ইমন সাহা (চলচ্চিত্র জান্নাত), শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক মাসুম বাবুল (চলচ্চিত্র একটি সিমোর গল্প)।
২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ গায়ক মাহফুজ আনাম জেমস (তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম, চলচ্চিত্র সত্তা), শ্রেষ্ঠ গায়িকা মমতাজ বেগম (না জানি কোন অপরাধে, চলচ্চিত্র সত্তা), শ্রেষ্ঠ গীতিকার দেদুল হোসেন (না জানি কোন অপরাধে, চলচ্চিত্র সত্তা), শ্রেষ্ঠ সুরকার সুবাশীষ মজুমদার বাপ্পা (না জানি কোন অপরাধে, চলচ্চিত্র সত্তা)।
২০১৮ সালের শ্রেষ্ঠ গায়ক নাইমুল ইসলাম রাতুল (যদি দুঃখ ছুঁয়ে দেখ, চলচ্চিত্র পুত্র), শ্রেষ্ঠ গায়িকা যুগ্মভাবে সাবিনা ইয়াসমিন (ভুলে মান অভিমান, চলচ্চিত্র পুত্র) ও আঁখি আলমগীর (গল্প কথার ঐ, চলচ্চিত্র একটি সিনেমার গল্প)। শ্রেষ্ঠ গীতিকার যুগ্মভাবে কবির বকুল (যদি এভাবেই ভালোবাসা, চলচ্চিত্র নায়ক), জুলফিকার রাসেল (যদি দুঃখ ছুঁয়ে দেখ, চলচ্চিত্র পুত্র), শ্রেষ্ঠ সুরকার রুনা লায়লা (গল্প কথার ঐ, চলচ্চিত্র একটি সিনেমার গল্প)।
২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার আজাদ বুলবুল (চলচ্চিত্র হালদা), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার তৌকির আহমেদ (চলচ্চিত্র হালদা), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা বদরুল আনাম সৌদ (চলচ্চিত্র গহীন বালুচর), শ্রেষ্ঠ সম্পাদক মোঃ কালাম (চলচ্চিত্র ঢাকা অ্যাটাক), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক উত্তম কুমার গুহ (চলচ্চিত্র গহীন বালুচর)।
২০১৮ সালের শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার সুদীপ্ত সাইদ খান (চলচ্চিত্র জান্নাত), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার সাইফুল ইসলাম নান্নু (চলচ্চিত্র পুত্র), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা এস. এম. হারুন-অর-রশীদ (চলচ্চিত্র পুত্র), শ্রেষ্ঠ সম্পাদক তারিক হোসেন বিদ্যুৎ (চলচ্চিত্র পুত্র), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক উত্তম কুমার গুহ (একটি সিনেমার গল্প)।
২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক কমল চন্দ্র দাস (চলচ্চিত্র গহীন বালুচর), শ্রেষ্ঠ শব্দ গ্রাহক রিপন নাথ (চলচ্চিত্র ঢাকা অ্যাটাক), শ্রেষ্ঠ পোষাক ও সাজ-সসজ্জা রিটা হোসেন (চলচ্চিত্র তুমি রবে নীরবে), শ্রেষ্ঠ মেকআপ ম্যান মোহাম্মদ জাভেদ মিয়া (চলচ্চিত্র ঢাকা অ্যাটাক)।
২০১৮ সালের শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক জেড এইচ মিন্টু (চলচ্চিত্র পোষ্ট মাস্টার ৭১), শ্রেষ্ঠ শব্দ গ্রাহক আজম বাবু (চলচ্চিত্র পুত্র), শ্রেষ্ঠ পোষাক ও সাজ-সসজ্জা সাদিয়া শবনম শানতু (চলচ্চিত্র পুত্র), শ্রেষ্ঠ মেকআপ ম্যান ফরহাদ রেজা মিলন (চলচ্চিত্র দেবী।
এর আগে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দিতে জুরি বোর্ড গঠন করে সরকার। গঠিত বোর্ড সংশ্লিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রগুলো মূল্যায়ন করে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম সুপারিশ করেছে। তার ভিত্তিতে প্রদান করা হয়েছে এই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
১৩ সদস্য বিশিষ্ট জুরি বোর্ডে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র) সভাপতি করা হয়েছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সদস্য-সচিব হিসেবে এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (চলচ্চিত্র) ও বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া ২০১৭ সালের জুরি বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব টেলিভিশন ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া, একুশে টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আহসান বুলবুল, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী কোহিনুর আক্তার সুচন্দা, চলচ্চিত্র অভিনেতা ও প্রযোজক এম এ আলমগীর, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, চিত্রগ্রাহক পংকজ পালিত ও সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম।
২০১৮ সালের জুরি বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব টেলিভিশন ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া, চলচ্চিত্র অভিনেতা ড. এনামুল হক, সংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, গীতিকার ও সংগীত পরিচালক হাসান মতিউর রহমান, অভিনেত্রী রওশন আরা রোজিনা, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র গ্রাহক সংস্থার যুগ্ম-মহাসচিব তপন আহমেদ।