জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্মরণ সভা ও মেডিকেল ভর্তিতে উত্তীর্ণদের সংবর্ধনা
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ জেলার কৃতি সন্তান প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান এঁর স্মরণসভা ও সাতক্ষীরা জেলা থেকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা-২০১৯ এ উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।
জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু ও শিশু স্বাস্থ্য ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব দেবাশীষ চৌধুরীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বদিউজ্জামান।
অনুষ্ঠানে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের পরিচিতি পর্বের পরেই ডা. এম আর খানের জীবনী ও কর্মজীবন সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন সহকারী কমিশনার জুবায়ের হোসেন। অনুষ্ঠানে দুইজন শিক্ষার্থী এবং একজন অভিভাবক তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা-২০১৯ এ উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান এবং তাদের মা-বাবাকে ধন্যবাদ জানান। সংসদ সদস্য এ সময় ভালো চিকিৎসক হিসেবে গড়ে উঠে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, এমন একটি দিনে জেলা প্রশাসন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা-২০১৯ এ উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার আয়োজন করেছে যাতে ডা. এম আর খানকে জানার সুযোগ পায় এবং উদ্বুদ্ধ হতে পারে। জীবন গড়ার জন্য অসাধারণ মানুষটির প্রয়াণ দিবস আজ। তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা বাংলাদেশকে পেয়েছিলাম একজন মানুষের কথায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান “যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো” এই কথার মাধ্যমে।
তাই আমাদেরকে অতীত ইতিহাস জানতে হবে। সফল এই মানুষদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হবে। যারা দেশকে ভালোবাসে তারা কখনো অন্যায় করতে পারে না, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিতে পারে না। কৃতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তাদের আকাক্সক্ষা থাকতে হবে ডা. এম আর খানের মত মানুষ হওয়ার। “দুর্জন বিদ্যান হলেও পরিত্যজ্য” সেই উপলব্ধি থেকে আদর্শবান মানুষকে অনুসরণ করতে হবে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী দিনের যে উন্নত বাংলাদেশের রূপকল্প তুলে ধরেছেন, সেই রূপকল্প বাস্তবায়নে সাতক্ষীরা জেলার ছেলেমেয়েরা সেখানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
সাতক্ষীরা জেলার এই কৃতি শিক্ষার্থীরা আগামী দিনে চিকিৎসা ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। মুজিব বর্ষ সম্পর্কে তিনি বলেন, মুজিব বর্ষকে নিয়ে এমনভাবে পরিকল্পনা করে এগিয়ে যেতে হবে যেন দেশ-বিদেশ অবাক হয়ে যাবে। সাতক্ষীরার প্রাণসায়ের খাল খনন করে মুজিব বর্ষ পালন করা হবে বলে অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেন তিনি।
জেলা প্রশাসক এ সময় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান। বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সাতক্ষীরা জেলা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিমুক্ত হলে জাতির পিতার সোনার বাংলা এবং প্রধানমন্ত্রীর উন্নত বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে ‘আমার পরিচয়’ কবিতা আবৃত্তি করেন।