তাকে আমি কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেব বান্ধবীদের লেখা নুসরাতের চিঠি

সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার হাতে যৌন হয়রানির পর সহপাঠী বান্ধবীদের উদ্দেশ্যে নুসরাত জাহান রাফি একটি চিঠি লেখেন। পড়ার টেবিলে খাতার ভেতরে ছিল দুই পাতার ঐ চিঠি। তামান্না ও সাথী নামের দুই বান্ধবীকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিটি। সেখানে রাফির দৃঢ় মনোবল ও অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার মনোভাব ফুটে উঠেছে।

গত ২৭ মার্চ ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছে নুসরাত। ঐ চিঠিতে নুসরাত আত্মহত্যা করবে না বলে উল্লেখ করে। তবে যৌন হয়রানির ঘটনার পর সিরাজ উদদৌলা গ্রেফতার হলে তার মুক্তির দাবিতে বান্ধবীদের অংশগ্রহণে ক্ষোভ প্রকাশ করে নুসরাত। তাকে নিয়ে বান্ধবীদের বিভিন্ন কটূক্তিতেও তার মর্মাহত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।

চিঠিটিতে নুসরাত লিখেছে, ‘তামান্না, সাথী। তোরা আমার বোনের মতো এবং বোনই। ঐদিন তামান্না আমায় বলেছিল, আমি নাকি নাটক করতেছি। তোর সামনেই বলল। আরো কি কি বলল, আর তুই নাকি নিশাতকে বলেছিস আমরা খারাপ মেয়ে। বোন প্রেম করলে কি সে খারাপ? তোরা সিরাজ উদদৌলা সম্পর্কে সব জানার পরও কীভাবে তার মুক্তি চাইতেছিস। তোরা জানিস না, ঐদিন রুমে কী হইছে?’

‘উনি আমার কোন জাগায় হাত দিয়েছে এবং আরো কোন জায়গায় হাত দেওয়ার চেষ্টা করেছে, উনি আমায় বলতেছে—নুসরাত ঢং করিস না। তুই প্রেম করিস না। ছেলেদের সাথে প্রেম করতে ভালো লাগে। ওরা তোরে কি দিতে পারবে? আমি তোকে পরীক্ষার সময় প্রশ্ন দেব। আমি লড়ব শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। আমি প্রথমে যে ভুলটা করেছি আত্মহত্যা করতে গিয়ে। সেই ভুলটা দ্বিতীয়বার করব না। মরে যাওয়া মানে তো হেরে যাওয়া। আমি মরব না, আমি বাঁচব। আমি তাকে শাস্তি দেব। যে আমায় কষ্ট দিয়েছে। আমি তাকে এমন শাস্তি দেব যে তাকে দেখে অন্যরা শিক্ষা নেবে। আমি তাকে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেব।—ইনশাআল্লাহ।’

সোনাগাজী মডেল থানার তত্কালীন ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন চিঠিটি উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছিলেন, এটিও ঐ ঘটনার আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)