তালার মহসিন ও ইয়াছিন বাহিনীর বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরার তালার মহসিন ও ইয়াছিন বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচারের দাবীতে ও সাংবাদিকদের ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের ওয়াজেদ আলী সরদারের ছেলে সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার জাকির হোসেন।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, উপজেলার মুড়াকলিয়া গ্রামের গফুর সরদারের ছেলে সন্ত্রাসী মহাসিন সরদার গত ১৯ অক্টোবর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে “আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী তালা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকিরের অত্যাচার থেকে রক্ষার দাবিতে সাংবাদ সম্মেলন” শিরোনামে যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। যা পরদিন দৈনিক পত্রদূত, কালের চিত্র, যুগেরবার্তা ও সুপ্রভাত বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তা আমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে।
যা আদৌ সঠিক নয়। তিনি যে সকল কাল্পনিক তথ্য দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমাকে ও আমার পরিবারকে সামাজিক ও রাজনৈতিভাবে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য সাংবাদিকদের ভুল বুঝিয়ে যে সংবাদ পরিবেশন করিয়েছেন আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রকৃত ঘটনা হলও, মুড়াকলিয়া পশ্চিম বিলে আমার ৭৫ বিঘার একটি মৎস্য ঘের রয়েছে।
উক্ত ঘেরে ১৭ অক্টোবর রাতের আধারে ইয়াছিন মেম্বরের ভাই সন্ত্রাসী মহাসিন সরদার ও তার বাহিনী আমার ঘেরের উত্তরপাশে বেড়িবাঁধ কেটে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মাছ সু-কৌশলে তাদের ঘেরে ঢুকিয়ে নেয়। এনিয়ে আমার পক্ষে তাদের সাথে কথা বলতে যাওয়ায় মুড়াকলিয়া গ্রামের ইজিবাইক চালক আঃ গনি মলঙ্গীকে খুন করার উদ্দেশ্যে লোহার রড এবং হাতুড়ী দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। চা ল্যকর এ ঘটনার পরদিন এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হয়।
যে কারণে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী ইয়াছিন ও মহাসিন বাহিনী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে আমার লোক-জনকে মারপিট করে। এ ঘটনায় তালা থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। এর আগে কয়েক মাসপূর্বে ঘের সংক্রান্ত বিষয়ে তালা উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিসে কক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে তালা-কলারোয়ার সংসদ সদস্যসহ শতাধিক লোকের সামনে সন্ত্রাসী ইয়াছিন সরদারের ভাই মহাসিন সরদার প্রকাশ্যে আমার হাত কেটে নিতে চেয়েছিলো। যেটি এলাকার শত শত লোক জ্ঞাত আছেন। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের দুর্নীতি নিয়ে যে অভিযোগ করেছেন, সেটিও মনগড়া,কাল্পনিক।
তিনি বলেন, আমার পরিবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তারা কখনও জামায়াত-বিএনপির রাজনীতির সাথে ছিলেন না। আমাকে হেও করতে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী ইয়াছিন মেম্বার ও তার ভাই মহাসিন এক প্রভাবশালী ব্যক্তির মদদে আমার বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে মহাসীন সরদার টাকার বিনিময়ে ২৯৮ টি ঘর প্রদান করা হয় বলে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছেন। প্রকৃত সত্য হলও সরকারের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এর আওতায় ‘জমি আছে ঘর নেই’ এমন ২৫৮ টি পরিবারকে প্রকাশ্যে যাচাই বাছাই করে বিনামূল্যে উক্ত ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ইয়াছিন মেম্বারের আপন চাচা আব্দুল আজিজ ছিলেন চরমপন্থি সংগঠন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির অ ল প্রধান। ওই সময়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও এলাকার অনেক নিরীহ মানুষকে হত্যা করেন। পরে এলাকাবাসীর হাতে গণপিটুনিতে নিহত হয় আব্দুল আজিজ। এ ঘটনার কিছুদিন ইয়াছিন মেম্বাররা চুপচাপ থাকলেও আবার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের কারনে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। বর্তমানে ইয়াছিন ও মহাসিন এলাকায় জোর পূর্বক জমি, মৎস্য ঘের, চাঁদাবাজি ও ঘেরের মধ্যে থেকে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনসহ নানা ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছেন।
এমতাবস্থায় তিনি এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ইয়াছিন সরদার ও মহাসিন সরদারের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগগুলো তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সদস্য ওকেল খাঁ, অরুন ঘোষ, মোহাম্মদ আলী নিকারী, হাফিজুর সরদার, আসাদুজ্জামান, রেহেনা খাতুন, শাহিদা বেগমসহ তার পরিষদের ১২ জন পুরুষ ও মহিলা ইউপি সদস্য।