যুবলীগের দুর্নীতিবাজ কেউ যেন গণভবনে না আসে

আওয়ামী যুবলীগের আসন্ন সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসের বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। বৈঠকে দুর্নীতির অভিযোগ আছে এমন কেউ যেন গণভবনে না আসে; তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বুধবার দুপুরে গণভবনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে যুবলীগের আসন্ন কংগ্রেস নিয়ে বৈঠক করার সময় চান। সে অনুযায়ী আগামী রোববার বিকেল ৫টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সঙ্গে বসার সময় দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

সংগঠনটির সূত্র জানায়, সাক্ষাৎকালে কংগ্রেস আয়োজনের দিকনির্দেশনার জন্য বৈঠকের অনুমতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ আছে এমন কেউ যেন তোমাদের সঙ্গে গণভবনে না আসে।

যুবলীগের নেতারা জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন এ কথা বলেছেন তখন চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে ছাড়াই বৈঠকে অংশ নেবেন তারা। সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদের নেতৃত্বে সংগঠনটির প্রেসিডিয়াম সদস্যরা এ বৈঠকে অংশ নিলেও থাকতে পারছেন না দুর্নীতির অভিযোগ থাকা নেতারা।

একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর শেষে দেশে ফেরার দিন গত ৭ অক্টোবর রাতে ওমর ফারুক চৌধুরী গণভবনে গিয়েছিলেন। ওইদিন গণভবনে উপস্থিত থাকা একাধিক নেতা নাম প্রকাশ শর্তে জানিয়েছেন, যুবলীগ নেতারা যে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সে দিকে প্রধানমন্ত্রী তাকাননি।

জানা গেছে, সর্বশেষ ১১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়াম বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন না যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে চেয়ারম্যানের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কয়েকজন নেতা। তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার কথাও বলেন তারা।

ওই সভা থেকেই সাধারণ সম্পাদককে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করার দায়িত্ব দেয়া হয়। বৈঠকের পর থেকে চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদেরও।

সূত্র জানিয়েছে, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক থাকেন চেয়ারম্যান, কিন্তু সপ্তম কংগ্রেসের প্রস্তুতি কমিটিতে ওমর ফারুক চৌধুরীকে না রাখার জন্য আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রোববারের বৈঠকে ওমর ফারুক চৌধুরীকে যুবলীগের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিও দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। একইভাবে বিভিন্ন অভিযোগ আসায় যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকেও সম্মেলনের আগে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের বিষয়ে যে কঠোর রয়েছেন সেই বার্তাটা দেয়া হবে।

এ বিষয়ে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বলেন, আগামী জাতীয় কংগ্রেসের বিষয়ে নেত্রীর গাইডলাইন দরকার আমাদের। এ বিষয়ে নেত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠকের অনুমতি নিতে আজ (বুধবার) নেত্রীর সঙ্গে আমি দেখা করেছি। তিনি আমাদের আগামী রোববার বিকেল ৫টায় গণভবনে সময় দিয়েছেন।

সংগঠনের চেয়ারম্যানের বিষয়ে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান যেহেতু প্রেসিডিয়াম বৈঠকে আসেন নাই, সেহেতু রোববারের বৈঠকে তিনি উপস্থিত থাকবেন কিনা সেটা পরিষ্কার নয়।

হারুনুর রশীদ বলেন, গণভবন একটি পবিত্র জায়গা। এখান থেকে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নেত্রী তার সমস্ত পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যান। কাজেই এই পবিত্র জায়গায় কোনো বিতর্কিত লোকের যাওয়া উচিত নয় বলে মনে করি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)