অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে খুলনার সহকারী কর কমিশনার গ্রেফতার
খুলনার সহকারী কর কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদকে (বরখাস্ত) গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিন কোটি ৪৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪১৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বয়রায় তার নিজ বাড়ির সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দুদকের খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নামজুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে চলতি বছরের ২৭ মে খুলনা কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার (সদর প্রশাসন) খোন্দকার তারিফ উদ্দীন আহমেদ বাদী হয়ে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত (খালিশপুর) অঞ্চলে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছে আদালত। খুলনার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম মঙ্গলবার ২৮ মে এ আদেশ দেন।
মামলায় অভিযোগ ছিল, তিনি খুলনা কর অঞ্চলের বিভিন্ন সার্কেলে কর্মরত থাকা অবস্থায় কর দাতাদের দেয়া আয়কর রাজস্ব তহবিলে জমা না দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হিসাবে জমা দিয়ে নিজেই তা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।
ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেজবাহ ২০১৭ সালের ৮ মে থেকে ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর পর্যন্ত খুলনা কর অঞ্চলের অধীনস্ত কর সার্কেল-১৪, বাগেরহাটে কর্মরত সহকারী কর কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ সময় তিনি করদাতাদের রাজস্ব হিসাবে দাখিল করা মোট ৪০টি পে-অর্ডার, ডিডি, ক্রস চেক সরকারি কোষাগারের পরিচালিত হিসাবে চালানের মাধ্যমে জমা না দিয়ে বাগেরহাট সোনালী ব্যাংক শাখায় জমা দেন। পরবর্তীতে তিনি সেই অ্যাকাউন্ট থেকে নিজের স্বাক্ষরে ২ কোটি ১০ লাখ ২৪ হাজার ৪২৩ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এছাড়া একাধিক চেকের মাধ্যমে বাগেরহাট ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা, সার্কেল-১৭ মোংলায় কর্মরত থাকা অবস্থায় সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক থেকে ২৯ লাখ ৯০ হাজার ৯৯৭ টাকা, জনতা ব্যাংক থেকে ২৯ লাখ ৯৯৮ টাকা, সার্কেল-১০ মাগুরায় কর্মরত থাকা অবস্থায় সোনালী ব্যাংক থেকে ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৪৮৪ টাকা, সার্কেল-২২ ভেড়ামারায় কর্মরত থাকা অবস্থায় জনতা ব্যাংক থেকে ৪২ লাখ, ৭ হাজার ৫২৭ টাকাসহ সর্বমোট ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪২৯ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সেই টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজস্ব তহবিলে জমা না দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাধিক বেতন হিসাব খুলে ব্যাংক থেকে টাকা নিজে উত্তোলন করেছেন। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন যুগ্ম কর কমিশনার মঞ্জুর আলম। তদন্তে অনিয়মের সত্যতা পাওয়া যায়। পরে রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
খুলনা কর অঞ্চলের কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায় বলেন, প্রাথমিক তদন্তে সহকারী কর কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী আদালতে মামলা হয়েছে।