বুয়েটে দলীয় ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা

পাঁচদিন ধরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১৯ শিক্ষার্থীকে বুয়েট থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।

শুক্রবার বিকেলে বুয়েট অডিটোরিয়ামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক বৈঠকের শুরুতেই ভিসি দাবিগুলো পূরণের কথা জানান। বিকেল সাড়ে ৫টায় বুয়েটের অডিটোরিয়ামে এ আলোচনা শুরু হয়। এর আগে বিকেল চারটা থেকে অডিটোরিয়ামে আসতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে ভিসি সাড়ে ৫টায় সেখানে প্রবেশ করেন।

ভিসি আরো জানান, আবরার হত্যা মামলার জন্য তার পরিবারকে সব খরচ ও ক্ষতিপূরণ দেবে বুয়েট প্রশাসন। আবাসিক হলগুলোতে র‍্যাগিংসহ পূর্বে সংঘটিত অন্যান্য ছাত্র নির্যাতনের ঘটনাবলী রেকর্ডিং এর জন্য অনলাইন কমপ্লেইনের ব্যবস্থা করা হবে। ভবিষ্যতেও কেউ জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আবরারের মরদেহ ক্যাম্পাসে আনার বিষয়টি জানতেন না বলে জানাজায় উপস্থিত হতে পারেননি বলে জানান বুয়েট ভিসি। এ জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

সাময়িক বহিষ্কারাদেশ কবে থেকে কার্যকর হবে শিক্ষার্থীদের এমন প্রশ্নের জবাবে ভিসি বলেন, বহিষ্কারাদেশ আজ থেকেই কার্যকর। আর স্থায়ী বহিষ্কার এর জন্য চার্জশিট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে করা হবে।

শিক্ষার্থীদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিষদের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, আইনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমার ধারণা কম। আগামীকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করা হবে মামলার অগ্রগতি কতটুকু হয়েছে তা জানার জন্য। তিনি আরো বলেন, আগামীকাল আবরারের পরিবারকে মামলার যাবতীয় খরচ নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (ইইই) ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে। ওইদিন রাত তিনটার দিকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একাধিক ভিডিও ফুটেজও পাওয়া যায়। আবরারকে হত্যার ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ৭ অক্টোবর রাজধানীর লালবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। আবরার হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে বুয়েট ছাত্রলীগের মোট ১৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)