৬১ বছর বয়সে বিয়ে করলেন অভিনেত্রী!

১৯৬৫ সালে মডেলিং শুরু করেন সুহাসিনী। পিয়ার্স সাবানের বিজ্ঞাপনে নজর কাড়েন তিনি। ওই বিজ্ঞাপন দেখে তাকে ‘ভুবন সোম’ সিনেমারর নায়িকা হিসেবে পছন্দ করেন মৃণাল সেন।

কিন্তু রঙিন দুনিয়ায় থাকেননি তিনি। চলে যান বিদেশে নামী প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষার জন্য। জীবনভর উজান-স্রোতে পাড়ি দিয়েছেন সুহাসিনী মুলে। ১৯৫০ সালের ২০ নভেম্বর তার জন্ম ভারতের পাটনায়। মাত্র তিন বছর বয়সে তিনি পিতৃহারা হন। তাকে ধরে বড় করে তোলেন মা বিজয়া মুলে। সুহাসিনীর মা বিজয়া নিজেও ছিলেন চলচ্চিত্র জগতের নামী ব্যক্তিত্ব।

৭০ এর দশকের শুরুতে সুহাসিনী ফিরে আসেন দেশে। তবে এই পর্বেও অভিনয় নয়। বরং, তিনি এলেন ক্যামেরার পেছনে। ‘জনঅরণ্য’ সিনেমায় তিনি সত্যজিৎ রায়ের সহকারী ছিলেন। মৃণাল সেনকে সাহায্য করেন ‘মৃগয়া’ সিনেমার ইউনিটে।

তারপর সুহাসিনী সিনেমা প্রযোজনা শুরু করেন। নির্মাণ করেন ৬০ টি তথ্যচিত্র। চারটির জন্য জাতীয় পুরস্কার পান। ‘ভুবন সোম’-এর প্রায় ৩০ বছর পরে সুহাসিনী ফিরে আসেন বলিউডের মূলস্রোতে। গুলজারের ‘হু তু তু’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্বঅভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন।

বেশ কিছু হিন্দি ছবিতে সুহাসিনী অভিনয় করেছেন চরিত্রাভিনেতা হিসেবে। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘লগন’, ‘দিল চাহতা হ্যায়’ এবং ‘মহেঞ্জোদারো’। সিনেমার পাশাপাশি সুহাসিনী কাজ করেছেন টেলিভিশন এবং ওয়েব সিরিজেও।

ব্যক্তিগত জীবনকে বরাবর প্রচারের আলো থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন সুহাসিনী। তিনি দীর্ঘদিন ছিলেন লিভ-ইন সম্পর্কে। সেই সম্পর্ক ভেঙে যায় ১৯৯০ সালে। এরপর ২১ বছর তিনি একাই জীবন কাটান। পরে ২০১১ সালে ষাটোর্ধ্ব সুহাসিনী বিয়ে করেন নামী বিজ্ঞানী ও পদার্থবিদ অতুল গুর্তুকে। তাদের আলাপ ফেসবুকে। ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারি আর্য সমাজে বিয়ে করেন ৬৫ বছর বয়সী অতুল এবং ৬১ বছর বয়সী সুহাসিনী।

সুহাসিনী জানান, তাদের দু’জনের কাজের ক্ষেত্র সম্পূর্ণ আলাদা। আণবিক বিজ্ঞানী অতুল সিনেমা নিয়ে আগ্রহী নন। বিপরীত মেরুর মানসিকতাই কাছাকাছি এনেছে তাদের।

প্রথমে সুহাসিনীর সিদ্ধান্তে স্বভাবতই বিস্মিত হয়েছিলেন তার পরিজন ও বন্ধুরা। কিন্তু পরে প্রত্যেকেই তার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন। বিজ্ঞানী অতুলের প্রথম স্ত্রী ছিলেন প্রমীলা। ৩৬ বছরের দাম্পত্যের পরে প্রমীলা মারা যান ২০০৬ সালে। তার আগে ১৯৯১ সালে মৃত্যু হয় অতুল-প্রমীলার একমাত্র সন্তান আশিসের।

অতুলকে বিয়ের পরে সুহাসিনী পঞ্জাবে গিয়ে দেখা করেন প্রয়াত প্রমীলার বাবা মা ও পরিজনদের সঙ্গেও। সুহাসিনীর বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন তার ৯০ বছর বয়সি মা, বিজয়াও। ৯৮ বছর বয়সে বিজয়া প্রয়াত হন ২০১৯ সালের ১৯ মে। বিয়ের পরে অতুল-সুহাসিনী থাকেন মুম্বইয়ে। দু’জনেই সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন নিজেদের কাজের জগতে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)