ঘুষ-দুর্নীতি নিয়ে পুলিশকে সতর্ক করলো সদর দপ্তর

সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে অবৈধ আর্থিক লেনদেন, ঘুষ, দুর্নীতির সংবাদ থাকলে সেই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতনদের আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা আবারও মনে করিয়ে দিল পুলিশ সদর দফতর। সম্প্রতি পুলিশের ‘নৈতিক স্খলনজনিত প্রসঙ্গে’ একটি চিঠি ইস্যু করে পুলিশ সদর দফতর।

পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সম্প্রতি পুলিশের ‘নৈতিক স্খলনজনিত প্রসঙ্গে’ ইস্যু করা চিঠিটি পুলিশের সব রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন ও ইউনিটের ঊর্ধ্বতনদের পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের ইউনিটপ্রধানদের উদ্দেশ্যে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অবৈধ আর্থিক লেনদেন ঘুষ-দুর্নীতি নিবারণ প্রসঙ্গে ‘শূন্য সহিষ্ণু (জিরো টলারেন্স)’ অবস্থান নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চিঠিতে সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মকাণ্ডে নৈতিক স্খলনের বিষয়টি পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা একটি ‘ডিসিপ্লিন ফোর্স’ হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণ্ন করে। অপরাধ চিহ্নিত ও দমন করাসহ জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার ক্ষেত্রে পুলিশের প্রতিটি সদস্যকে নৈতিকতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে।

পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে, পুলিশ আইন, পিআরবি এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা সম্পর্কে পুলিশ সদস্যদের প্রতি মাসে অবহিত করা এবং নৈতিক স্খলনের বিষয়টি পুলিশদের সচেতন করা। ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্র সরকার কিংবা কোনো বাহিনী বিভাগ সংস্থা সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে হবে। ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট এবং সামাজিক অসন্তোষ সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আহত আঘাতেও কিংবা সামাজিক বিতর্ক তৈরি করে এমন কোনো পোস্ট শেয়ার করা যাবে না।

এছাড়া যেকোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী শিশু নির্যাতন বা অন্য যেকোনো স্পর্শকাতর ঘটনা শেয়ার পোস্ট থেকে বিরত রাখা, আসামি গ্রেপ্তার, পরিবহন এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় ফৌজদারি কার্যবিধি এবং বাংলাদেশ পুলিশের প্রবিধানের বিধিবিধান অনুসরণ করা, সাধারণ মানুষ হয়রানি না হয় তা নিশ্চিত করা, সেবাপ্রত্যাশীদের সাথে ভালো ব্যবহার করা, পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্য যদি নৈতিকতাবিরোধী কিছু করে তাহলে কাল বিলম্ব না করে ইউনিটপ্রধান এ বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে অনুসন্ধানপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের বিষয়ে কোনো সংবাদ পাওয়া গেলে সাথে সাথে ইউনিটপ্রধানরা তার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কোনো সংবাদ গোপন করার কোনো বিষয় পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট অফিসার, ইনচার্জ অথবা ইউনিটপ্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া দায়িত্বরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের মোবাইলে, মোবাইল ইন্টারনেট, চ্যাটিং, গান শোনা এবং ওয়াজ শোনা থেকে বিরত থানার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এর আগেও একাধিকবার অনিয়ম, অবৈধ লেনদেনের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। সম্প্রতি আবারো একই ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)