শ্যামনগরের পদ্মপুকুরের কুখ্যাত ভূমিদস্যু কাশেম বাহিনীর অত্যাচারে ৫টি পরিবার বাড়ি ছেড়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ সংবাদ সম্মেলনে

 শ্যামনগরের পদ্মপুকুরের কুখ্যাত ভূমিদস্যু একাধিক মামলার আসামী কাশেম বাহিনীর অত্যাচারে ৫টি পরিবার গত ৩ মাস বাড়ি ছেড়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে এ অভিযোগ করেন, পদ্মপুকুর ইউনিয়নের খুটিখাটা গ্রামের ছবেদ আলী গাজির পুত্র হাবিবুর রহমান।

তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা পদ্মপুকুর ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণভাবে দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছি। কিন্তু একই ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ ও সম্পত্তি জবর দখলকারী আবুল কাশেম ও তার ভাই আজিজুলের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছি। তাদের ভয়ে ইউনিয়নের বহু মানুষ বাড়ি ঘর ছেড়ে শহরে এসে ফুটপাতে জীবন-যাপন করছেন। আমাদেরও বাড়িঘর, মৎস্য ঘের দখল করে তাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে আমরা বাড়ি ছাড়া হয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছি। তিনি বলেন, সোনাখালী গ্রামের ফেরদৌস হোসেন পদ্ম পুকুর মৌজায় ৩.৮৩ একর রেকর্ডীয় পৈত্রিক সম্পত্তিতে দীর্ঘ ৪০/৪৫ বছর যাবত মৎস্য ঘের পরিচালনা করে আসছিল।

কিন্তু সম্প্রতি কাশেম, তার ভাই আজিজুলসহ তাদের বাহিনীর সদস্য পাতাখালী শফিকুল ইসলাম, এরশাদুল, আমিরুল ইসলাম ও ইয়াকুব আলী গাজীসহ ১৫/২০ জন গত ২৩ জুন ২০১৯ তারিখে অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আইন আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে উক্ত ঘের দখল করে নেয়। এঘটনায় ফেরদৌস একটি মামলা দায়ের করেন। এতে কাশেম বাহিনী আদালত থেকে জামিন নিয়ে বাড়ি ফিরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে খুন জখমের উদ্দেশ্যে তাকে খুজতে থাকে। কিন্তু তাকে না পেয়ে তার ছোট ভাই মাসুম বিল্লাহকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে। জীবনের ভয়ে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে সাতক্ষীরায় চলে আসেন। প্রায় ৩ মাস তিনি বাড়ি ছাড়া।

এছাড়া গত ১৩ জুলাই কাশেম বাহিনীর লোকজন ফিল্মি স্টাইলে অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তিনটি অসহায় পরিবার শহিদুল, জয়নাব বিবি ও জাহিদার বাড়ি ঘর ভাংচুর করে তাড়িয়ে দেয়। এতে অসহায় পরিবারগুলো বাধা দিতে গেলে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কষ্টে অর্জিত বাড়িঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এঘটনায় তারা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন ফল পাননি। উল্টো কাশেম বাহিনীর ভয়ে তারাও তিন মাস যাবত ভিটেবাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন মানুষের বারান্দায় আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। এসব বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করলে উল্লেখিত কাশেম বাহিনী আমাকেও খুন জখমের হুমকি প্রদর্শন করে।

এক পর্যায়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করলে পুলিশ তাৎক্ষনিকভাবে আমাকে উদ্ধার করে। এছাড়া কাশেমের নেতৃত্বে তার ভাই আজিজুল, মাজেদ ও বাবলুসহ ১৫/২০ জন অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি ভাংচুর করে। বর্তমানে আমি জীবনের ভয়ে বাড়ি ছাড়া হয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছি। তিনি আরো বলেন, কাশেমের বিরুদ্ধে নারী ধর্ষন, অন্যের জমি দখল, চাঁদাবাজি, মৎস্য ঘের দখল ও লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগে কমপক্ষে ৭টি মামলা রয়েছে।

এমতাবস্থায় তিনিসহ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা কাশেম বাহিনীর হাত থেকে জীবনের নিরাপত্তাসহ তাদের বসতভিটায় ফিরে পেতে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ফেরদাউস, শহিদুল, জয়নাব বিবি, মোস্তফা ও জাহিদা খাতুন প্রমুখ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)