অবৈধ কয়লা কারখানা হুমকির মুখে পরিবেশ
সখীপুরে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘেঁষে অবৈধভাবে গড়ে ওঠেছে কয়লা কারখানা। এতে শাল-গজারি, আকাশমনি, ইউক্যালিপটাস, মেহগনি ও বেলজিয়ামসহ নানা প্রজাতির কাঠ কয়লা বানানোর কাজে পুড়ানো হচ্ছে। ফলে কারখানার ধোঁয়ায় পরিবেশ হুমকির মুখে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কীর্ত্তণখোলা গ্রামের ধুমখালী এলাকায় ৬টি, তেঁতুলিয়াচালা গ্রামে ৬টি, এবং কালিয়ান-পাড়া গ্রামে ৭টি কয়লার কারখানা রয়েছে। এসব কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে সামাজিক বন ঘেঁষে এবং ঘনবসতি এলাকায়।
প্রতিটি কারখানা বন বিভাগের সখীপুর হতেয়া রেঞ্জের কালিদাস বিট কার্যালয়ের আওতাধীন রয়েছে। কয়লা বানানোর মাটির তৈরি বড় আকারের চুলা। সংরক্ষিত ও সামাজিক বন থেকে আনা কাঠ ওই চুলায় দিন-রাত পুড়িয়ে কয়লা বানানো হচ্ছে।
কারখানার আশপাশে বিশাল আকৃতির কাঠ স্তুপ করে রাখা আছে। চার-পাঁচজন শ্রমিক দিন-রাত কাঠ চুলায় পোড়ানোর কাজ করছেন।
দিনরাত ওইসব চুলা থেকে নির্গত ধোঁয়া গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে এসব এলাকার শিশু, বৃদ্ধ, গবাদি পশু-পাখিসহ ফসলও নানা রোগে আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে সামাজিক বনায়ন ও সংরক্ষিত শাল-গজারি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) টাঙ্গাইল শাখার জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা সোমনাথ লাহিরী বলেন, বনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকলসহ বন ও পরিবেশ বিধ্বংসী কোনো কারখানা গড়ে তোলা বেআইনী।
কারখানা থেকে ১০০ গজের মধ্যে আবদুল করিমের বাড়ি। তিনি বলেন, ‘দিনরাত কারাখানার ধোঁয়া ও গন্ধে বাড়িতে থাকা যায় না। পরিবারের প্রায় সকলেই কোন না কোন অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে কাশিতো আছেই।’
কালিদাশ বন বিট কর্মকর্তা এমরান আলী বলেন, সামাজিক বনায়ন ঘেঁষে এসব কয়লা কারখানা গড়ে উঠলেও এটা বনবিভাগের জমিতে নয়, পাবলিকের জমিতে গড়ে ওঠেছে। বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের দেখ ভালের দায়িত্ব। ওইসব কারখানা উচ্ছেদের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) হারুন অর-রশীদ বলেন, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা দায়ি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আয়শা জান্নাত তাহেরা বলেন, খুব শিগগিরই ওইসব কয়লা কারখানা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হবে।