বৈধ কাগজপত্র ও দখল বুঝে পেলেও দোকানদারী করতে না পারায় ব্যবসায়ীর সংবাদ সম্মেলন
দীর্ঘ ১২ বছর পর বৈধ দোকানঘর বুঝে পেলেও দোকানদারী করতে না পারার অভিযোগ এনে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, শহরের পলাশপোল এলাকার মৃত আদম আলী মুন্সির ছেলে আব্দুর রাজ্জাক।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি গত ৩০-০৯-২০০৯ তারিখে পৌরসভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১২২৫৩ দাগে ১০ ফুট বাই ১০ ফুট জমি বন্দোবস্ত নেই। সাবেক পৌর মেয়র শেখ আশরাফুল ইসলাম ১৮-১০-২০০৯ তারিখ থেকে ১৭-১০-২০১৩ সাল পর্যন্ত এই বন্দবস্তে স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে ৮-০৬-২০১০ তারিখে ১২২৫২ দাগে ১০ ফুট বাই ১৫ ফুট জমি বন্দোবস্ত নেই। শহরের মেহেরুন প্লাজার সামনে অবস্থিত ঐ স্থানে জাকির ক্লথ স্টোর নামে একটি দোকান প্রতিষ্ঠা করি। আমার সাথে বন্ধুত্বের সুবাদে বাটকেখালি গ্রামে আব্দুর রশিদ মোল্লার নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা জামানত গ্রহণ করি এবং মাসিক ১৬০০ টাকা ভাড়ায় একটি চুক্তিপত্র লিখে দেই। আব্দুর রশিদ ২ বছর ভাড়া প্রদানের পর হঠাৎ ভাড়া প্রদান বন্ধ করে বিভিন্ন রকম তালবাহানা, ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দোকানঘরটি নিজের বলে দাবি করেন।
তিনি আরো বলেন, নিরুপায় হয়ে আমি প্রাণসায়র ব্যবসায়ী সমিতির কাছে অভিযোগ করি। এরপর সমিতির এক শালিসে আব্দুর রশিদ দোকান ছেড়ে দেওয়ার ওয়াদা করে। পরবর্তীতে দোকানঘর ছেড়ে না দিয়ে সময় চান এবং পূর্বের মতো তালবাহানা শুরু করেন। আব্দুর রশিদের উক্ত কার্যকলাপে সমিতির নেতৃবৃন্দ নিন্দা প্রকাশ করেন। অথচ আমার নামে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে এবং ২০০৮ সালে জাকির ক্লথ স্টোরের নামে ট্রেড লাইসেন্সও রয়েছে। এরপর আমি অসহায় হয়ে দোকান ফিরে পেতে তৎকালীন পৌর মেয়র বরাবর একটি আবেদন করি।
বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য তৎকালিন কমিশনার ওবায়দুল্লাহ, সৈয়দ মাহমুদ পাপাসহ কয়েকজন উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রদান করেন এবং এ বিষয়ে গত ২৫-০২-২০০৮ তারিখে মেয়র বরাবর একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, দোকানঘর ছেড়ে না দেয়ায় আব্দুর রশিদ ভুল স্বীকার করেন। তাছাড়া আব্দুর রশীদ তৃতীয় পক্ষ জনৈক বাবুখানের নিকট থেকে যে এফিডেফিট করে নিয়েছেন তার কোন আইনগত ভিত্তি নেই। তাদের মতামতে আরো উলোখ করেছেন, তিনি যদি স্বেচ্ছায় তার পজিশন ছেড়ে না দিলে আব্দুর রাজ্জাক আইনি ব্যবস্থা নিবেন।
তিনি আরো বলেন, মামলাবাজ একরামুল কবির (বাবুখান) সদর এসিল্যান্ড অফিসে ১১/ ৭৪-৭৫ নং এক ভূঁয়া এমসি কেস সৃষ্টি করে আমিসহ ১১জন নিরিহ দোকানদারদের হয়রানি করছে। এ ব্যাপারে সদর সহকারী কমিশনার(ভূমি) উক্ত ১১/ ৭৪-৭৫ নং কেসটির কোন অস্তিত্ব নেই মর্মে প্রত্যয়ন দিয়েছেন। সর্বশেষ আমি আমার অধিকার ফিরে পেতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে দোকানঘর দখলে নিয়ে নেই। অথচ আব্দুর রশিদ যে আমার ভাড়াটিয়া তা গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্বীকারও করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রশিদ দোকান লুটপাটসহ যে সব অভিযোগ করেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র মূলক। গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে আমি যাতে নির্বিঘ্নে দোকানদারি করতে পারি এবং বকেয়া দোকান ভাড়া পেতে পারি তার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি অভিযোগও করি। আমার কাগজপত্র বৈধ। কারণ আমি জমির মালিক ও পৌরসভার নিকট থেকে বৈধ বন্দোবস্ত গ্রহণ করেছি। এমতাবস্থায় তিনি যাতে দোকানঘরটি চালু করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন সে জন্য সংশি¬ষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিক্রমপুর গার্মেন্টের স্বত্বাধিকার আবুল হোসেন, বিসমিল¬াহ টেইলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী জামায়াত আলী, রয়েল সেনেটারির স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম, এন ইসলামের স্টাফ গোলাম মোস্তফা, ফাল্গুনী বস্ত্রালয়ের স্টাফ কামরুল ইসলাম ও আব্দুর রাজ্জাকের জামাতা আব্দুস সালামসহ স্থানীয় অনেক দোকানদার উপস্থিত ছিলেন।