‘আমাকে খোঁজাখুঁজি করে লাভ নেই’ লিখে ক্লাশের ফাস্ট বয় নিখোঁজ
‘আমি গৃহপলায়ন করি নাই। গৃহত্যাগ করিলাম। সত্যের সন্ধানে যাচ্ছি। আমাকে খোঁজাখুঁজি করে লাভ নেই। সত্যের মধ্যে সত্য আছে। কাজের ভেতরে কাজ আছে।‘ নিখোঁজ সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মোহায়মিনুল ইসলাম মোমিনের লেখা এই চিরকুট নিয়ে রহস্যের শেষ নেই।
নিখোঁজ স্কুলছাত্র সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে একটি চিরকুটে এসব কথা লিখে শুক্রবার রাতে সে এশার নামাজ পড়ার কথা বলে শহরের মনজিতপুরের ভাড়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নিজ হাতে লেখা দীর্ঘ চিঠিতে সে আরো লিখেছে, ‘দীর্ঘকালে আমাকে কেউ চিনে নাই, জানে নাই আমার কাজকে। আজ হয়তো প্রভূর অনুমতিক্রমে আমার সময় শেষ। তাই চলিলাম। ইহা স্বাভাবিক। অন্তত মুসলিমের পক্ষে। আমি সত্য লইয়াই আঁধার রাতে বাহির হইয়াছি।’
নিখোঁজ স্কুলছাত্রের বড় ভাই আবদুল আহাদ বলেন, সে চুপচাপ স্বভাবের ছেলে। তার কোনো বন্ধুও নেই। দুই একটি ছেলের সঙ্গে সে স্কুলে যেতো। সে লেখাপড়ার পাশাপাশি সব সময় আল্লাহর পথ নিয়ে ভাবতো। কথা বলতো এবং কবিতা লিখতো।
গোপালগঞ্জ সদরে বাড়ি তাদের উল্লেখ করে আবদুল আহাদ বলেন, ক্লাশে তার রোল-১। সে আধ্যাত্মিক কথাবার্তা লিখে গেছে। প্রকৃতপক্ষে সে কোথায় গেছে তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে ।
মোহায়মিনুলের বাবা পুলিশ কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার ছেলে নম্র ও ভদ্র স্বভাবের। সে কোনো চক্রের খপ্পরে পড়ে থাকতে পারে। জেলা পুলিশের সহায়তায় তাকে আমরা খুঁজছি। এখনো পাইনি।
সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেশ সরকার বলেন, শনিবার সকালে মোহায়মিনুলের বাবা পুলিশ কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান তার কাছে এসে জানান, তার ছেলের গৃহত্যাগের কথা। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, ছেলেটি অত্যন্ত বিনয়ী নম্র ও ভদ্র স্বভাবের। তিনি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। তার লেখাপড়া আচরণ সবদিকই ছিল প্রশংসনীয়।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চিঠিতে যেসব কথা বলা হয়েছে তা আধ্যাত্মিক ভাষায়।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার অ্যাডিশনাল এসপি মো. ইলতুৎমিশ বলেন, ছেলেটির নিখোঁজ খবর শুনে আমরা সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি । তবে সে কোথায় এবং কেন গেছে তার কোনো হদিস মিলানো যায়নি।