আশাশুনির বয়ারশিং সরঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে নাভিঃশ্বাস

আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের ৬৬ নং বয়ারশিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃষ্টির পানির চাপে ক্লাশ বন্দের উপক্রম হয়েছে। বিদ্যালয় চত্ত্বর ও বিদ্যালয়ে যাতয়াতের পথ পানিত নিমজ্জিত থাকায় চরম বিপত্তি রয়েছেন স্কুল সংশ্লিসব কয়টি পথ অর্থাৎ কেয়ারের রাস্তা সম্পূর্ণ ভাবে পানিতে তলিয়ে আছে। স্কুল চত্বর পানিতে তলিয়ে স্কুল ভবনে ঢুকছে। হাটু পানি, কোথাও কোথাও কোমর পানি ঠেলে স্কুলে যাতয়াত করতে হয়। অতি কষ্টে দু’টি নৌকা মাঝে মধ্যে ব্যবহারের জন্য পাওয়া গেলেও তা সকলকে ব্যবহার করার সুযোগ ও সময়ও পাওয়া যায়না। ফলে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য কঠিন নাজুক পরিস্থিতিতে চলছে বয়ারশিং সরকারি প্রাইমারী স্কুল।

১৯৪১ সালে স্থাপিত বিদ্যালয়টির বিল্ডিং নির্মান করা হয় ২০০০ সালে। অফিস কক্ষসহ মোট ৬ কক্ষ বিশিষ্ট দ্বিতলা বিল্ডিং-এর অবস্থা নাজুক হয়ে পড়লে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য বরাদ্দ প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে কিছু সংস্কার কাজ করা হয়েছে। দেখতে কিছুটা ভাল লাগলেও ভবনের অবস্থা শোচনীয়ই রয়ে গেছে। শিক্ষকের সংখ্যা ৩, শূণ্য পদ রয়েছে ২টি। তার পরও শিক্ষকরা অতিকষ্টে স্কুল পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু ভবনের দুরাব্স্থার পাশাপাশি বর্ষকাল আসলেই বিদ্যালয়টি পনিতে ভাসতে শুরু করে। স্কুলে যাতয়াতের পথ পানিতে নিমজ্জিত থাকায় শিক্ষকরা লুঙ্গি-গামছা পরে হাটু-কোমর পানিতে স্কুলে আসলেও শিক্ষার্থীরা পড়ে চরম বিপাকে।

আষাঢ় মাস থেকে শুরু হয়ে আশি^স মাস পর্যন্ত ৪ মাস পানির ধকলে থাকতে হয় প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের। শিক্ষার্থীরা কখনো কোমর পানিতে বই হাতে, আবার কখনো গলা পানিতে বই মাথায় নিয়ে অভাবনীয় ভাবে স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করে। শিশু থেকে ২য় শ্রেণি ও ৩য় শ্রেণির অনেকেই স্কুলে আাসতে পারেনা। অভিভাকরাও তাদের ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠান বন্ধ করে দেয়। ফলে বছরের ৪টি মাস এ স্কুল বন্দের উপক্রম হয়ে পড়ে। বিদ্যালয়টিতে বয়ারশিং, ঢালীর চক, বিল মহিষকুড় ও পুইজালার অংশ বিশেষের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করে থাকে। কিন্তু সকল গ্রামের শিক্ষার্থীরাই পানির ধকলের শিকার। স্কুলের ২টি ল্যাট্রিনের ১টি পনিতে তলানো। সুপেয় পানির ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। সবমিলে স্কুলটি সম্পূর্ণভাবে চালানোর পরিবেশ ধ্বংস হতে চলেছে। এই স্কুলটি ক্লাস্টারের মডেল টেস্ট পরীক্ষা কেন্দ্র। এখানে পাশর্^বর্তী ৭টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতি বছর মডেল টেষ্ট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে। যাতয়াতের পথ উচু করে পুনঃ নির্মান না হলে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কষ্টকর হবে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, এলাকার পরিবেশ অনুযায়ী এখানে সাইক্লোন শেল্টার কাম স্কুল বিল্ডিং নির্মান করা দরকার। স্কুল থেকে লক্ষ্মীখালী হয়ে পুইজালা যোগেশ^র এর দোকান পর্যন্ত এবং স্কুল হতে বিল মহিষকুড় হয়ে চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিলের মৎস্য ঘের পর্যন্ত সড়কটি উচু করে নির্মান করে পাকা করনের ব্যবস্থা নিলে ভোগান্তি কমান সম্ভব হবে। ক্লাস্টার অফিসার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহাজাহান আলি জানান, স্কুলের সার্বিক অবস্থা খুবই শোচনীয়। স্কুলের চিত্র তুলে ধরে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবী সুদুর পল্লীর ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য এই প্রতিষ্ঠান খুবই প্রয়োজনীয়। এখানে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ও অতি জরুরী ভাবে সাইক্লোন শেল্টার কাম স্কুল ভবন নির্মান এবং মাটি ভরাটের পাশাপাশি সড়কের উন্নয়ন খুবই প্রয়োজন। বিষয়টি সরকারি দপ্তর প্রধান ও জন প্রতিনিধিদের সুনজর দেওয়ার জন্য তারা বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)