ড্রাগনে রঙিন স্বপ্ন
সফলতার জন্যই জীবনের সব পরিশ্রম। আর সফলতা পেলে আরো রঙিন স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করে মানুষ। এর ব্যতিক্রম নয় শেরপুরের নকলা উপজেলার ড্রাগন চাষিরা। সম্প্রতি মূল্যবান এ ফলটির ভালো উৎপাদন ও দর পাওয়ায় আরো উদ্যোগী হচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা।
উপজেলার পোলাদেশী, বাছুর আলগা, ছোট মোজার, বড় মোজার, বাউসা, জানকিপুর ও রামপুর এলাকার অনেকে সফলতার মুখ দেখতে শুরু করেছেন। সম্ভাবনার ফল হিসেবে সৌখিন চাষের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষে মনোযোগী তারা।
এমন এক সৌখিন চাষি হলেন উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউপির রামপুর এলাকার রফিকুল ইসলাম। তার বাগানের ড্রাগন গাছে সাদা-হলুদের মতো দৃষ্টিনন্দন অসংখ্য ফুল ঝুলছে। ঝুলছে ছোট-বড় অনেক লাল-সবুজ কাঁচা-পাকা ড্রাগন ফল। এ চিত্র দেখে চাষির চোখ ও মুখে আনন্দের ঝিলিক।
রফিকুল জানান, তার বাগানে ছোট-বড় ৩২০টি ড্রাগনের গাছ রয়েছে। কয়েক বছর ধরে তার বাগানে প্রতি মৌসুমে ৪০০ থেকে ৫০০টি ফল ধরেছে। খুচরা হিসেবে আকারের ভিত্তিতে প্রতি ফল ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা করে এবং পাইকারি হিসেবে প্রতি কেজি ৮০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। তাছাড়া প্রতিটি কাটিং করা চারা আকার অনুযায়ী ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করেন।
এ ফল চাষে সফলতা দেখেছেন ভূরদী খন্দকার পাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার ২৫ সদস্য। তারা ড্রাগন গাছের কাটিং চারা পেতে পুরাতন চাষি হালিম, কিতাবালী, পারুল, রফিকুলকে বলে রেখেছেন। এ সংস্থার সভাপতি মো. ছাইয়েদুল হক, হেলাল, বেলাল, ঈসমাইল ও কামালসহ আরো তিন থেকে চার চাষি দুই-একটি করে চারা সংগ্রহ করে রোপন করেছেন।
তারা জানান, উপজেলার বানেশ্বরদী ও চন্দ্রকোনা ইউপির ৩২০ কৃষকের মাঝে ড্রাগন গাছের কাটিং চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। ২০১২ সালে এর আয়োজন করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জামালপুর হর্টিকালচার সেন্টার ও নকলা কৃষি অফিস।
তারা আরো জানান, রামপুরের রফিকুল ইসলাম, ছোট মোজারের মোশা শেখ ও আবু বাক্কার, মোজারের কিতাবালি, পোলাদেশীর আব্দুল হালিম, সাজু ও আকাব্বর আলী, বানেশ্বরদীর চুন্নু মিয়া, মিরাজ আলী ও আজিজুল হক, বাউসা গ্রামের পারুল বেগম ও বাছুর আলগার সাজু সাঈদ সিদ্দিকীসহ অনেকের গাছে চার বছর ধরে নিয়মিত ফল আসছে। এতে তারা লাভের মুখ দেখছেন। এতে লাভজনক ড্রাগন ফল চাষে নতুন রঙিন স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা।