বাইপাস সড়কে লাগানো বেশির ভাগ গাছের চারাই গায়েব(ভিডিও)

আহাদুর রহমান (জনি):

সাতক্ষীরা ভোমরা বন্দর হতে মালামাল দ্রুত সরবরাহ ও শহরে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। যা উদ্বোধনের অপেক্ষায়। বাইপাস সড়ক রক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দৃষ্টি নন্দন পরিবেশ গড়ে তুলতে বাইপাস সড়কের দু’ধারে অসংখ্য তাল বীজ রোপণ করা হয়। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এগুলো ধ্বংসের পথে।

গত বছরর ৫ই অগাস্ট থেকে জেলা পুলিশের উদ্যোগে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কের দুই ধারে বিভিন্ন প্রজাতির দশ হাজার গাছের চারা লাগানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তৎকালীন পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান। এছাড়াও একই বছরের ১৫ই সেপ্টেম্বর ‘ল’ স্টুডেন্ট ফোরাম ও সুহাইল যুব একাডেমী ও অনিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাইপাসের বিনেরপোতা অংশ থেকে চার কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে তালবীজ রোপণ করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বাইপাস সড়কের দুই পাশে অসংখ্য গাছ লাগান হয়।

https://www.facebook.com/1097067257079185/videos/439756969956295/

গত এক বছরে এসব গাছ অনেক বড় হওয়ার কথা থাকলেও চিত্র পুরোটাই উল্টো। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গায়েব হয়ে গেছে বেশির ভাগেই। কিছু তালের চারা বের হলেও বেশির ভাগেরই মাথা মুড়ানো। বাইপাস সড়কের দুই ধারে গরু ছাগল বেধে ও ছেড়ে রাখায় তালের চারা মুড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের সচেতনতার অভাব হওয়ায় তারাও গাছের ক্ষতি সাধন করছে। আরও আছে, সড়কের দুই ধারের মাটি সমান করার সময় এস্কেভেটর মেশিনে কাটা পড়ে বেশ কিছু গাছ। ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে এসব গাছ রক্ষায় নেই কোন উদ্যোগ।

বাইপাস সড়কের কাশেমপুর অংশের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, গাছতো অনেকে অনেকভাবেই লাগিয়েছে। কিন্তু গাছ লাগিয়ে আর কোনদিন কেউ দেখতে আসেনি। বেশির ভাগ গাছ তীব্র গরমে পানির অভাবে মারা গেছে, আবার কিছু গাছ গরু-ছাগলে খেয়েছে। কিছু কিছু গাছ গ্রামের কতিপয় মানুষ তুলে নিয়ে গেছে। আবার রাস্তার সাইডে মাটি বাধানোর সময় অনেক গাছ মারা পড়ে।

বকচরা অংশের কামরুল ইসলাম বলেন, গত বছর অনেককেই গাছ লাগাতে দেখেছি। কিন্তু এরপর পানি দিতেও কেউ আসেনি।

বাইপাসে লাগানো হাজার হাজার গাছের চারা মরে গেছে আর কিছু চারা ছাগল-গরু খেয়ে নষ্ট করছে। এ বিষয়ে সামাজিক বন বিভাগের ফরেষ্টার জি এম মারূফ বিল্লাহ বলেন, বাইপাস সড়কে লাগানো গাছের চারা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের না। ওটা সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা। ওদেরই দায়িত্বে আছে। তবে সে রকম নির্দেশনা পেলে আমরা বাইপাসে লাগানো গাছের চারা রক্ষণাবেক্ষণ করব।

বাইপাস সড়কে লাগানো গাছের চারা সম্পর্কে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, এ গুলো দেখভাল করার দায়িত্ব আমাদের না। কারণ আমাদের সাথে কোন রকম আলোচনা ছাড়া এবং অনুমতি ছাড়া এই কাজ গুলো করা হয়েছে। আমরা যে সকল গাছ রোপণ করি কমপক্ষে দুই বছর সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করি। আমিও দেখেছি কিছু গাছ আছে আর কিছু গরু নষ্ট করেছে। যারা গাছ লাগিয়েছেন রক্ষণাবেক্ষণের দায়ভার তাদের।

তবে নতুন করে গাছ লাগানোর বিষয়ে তিনি বলেন, বাইপাস সড়কটি উদ্বোধনের পর আমরা গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিব। যেখানে যেই গাছ লাগালে ভাল হয় বা যেখানে গাছ মরে গেছে সেখানে নতুন গাছ লাগান হবে এবং এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ আমরাই করব।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)