বনদস্যু আজাদ গাজীর দাপটে অতিষ্ঠ সুন্দরবন জনপদের মানুষ
সুন্দরবনের দস্যুতা এবং মাদক কারবার সহ নানা ঘটনায় ৩০ বার জেলখাটা দুর্ধর্ষ বনদস্যু আজাদ গাজী তার বাহিনী নিয়ে আবারও হুমকি ধামকি দিচ্ছে। গত ৩০ জুলাই যতীন্দ্রনগর গ্রামের আব্দুল আলিমের কাছ থেকে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা ছিনতাই করে তাকে কুপিয়ে আহত করে ফেলে যাওয়ার পর তার অবস্থা এখন শঙ্কাজনক। অপরদিকে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে একই গ্রামের জব্বার গাজীর ছেলে আজাদ গাজী, তার ছেলে আনিসুর রহমান, আশিক গাজী, তার ভাই কাশেম গাজী, সহযোগী নূর আলীর ছেলে ফজলু গাজী ও ফজলুর ছেলে জলিল গাজী সহ ১০-১৫ জনের একটি বাহিনী।
বুধবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে একথা জানান শ্যামনগর উপজেলার যতীন্দ্রনগর গ্রামের আব্দুর রউফ গাজীর ছেলে আব্দুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তার ভাই আব্দুল আলিম ১ লাখ ৮ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় আজাদ গাজী বাহিনী টাকা ছিনতাই করতে রাম দা, শাবল ও কুড়াল দিয়ে তাকে আঘাত করে ফেলে রেখে যায়। প্রথমে তাকে শ্যামনগর হাসপাতাল ও পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাতে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। আব্দুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তার মেজ ভাই রমজান গাজী শ্যামনগর থানায় একটি মামলা করেন। এ খবর পেয়ে বনদস্যু আজাদ বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। তারা বলেছে, ‘আলিম তো মারা গেছে ভেবে ফেলে রেখে গিয়েছিলাম, মামলা তুলে না নিলে তোদের হত্যা নিশ্চিত না করে যাবো না। রাস্তাঘাটে যেখানে পাবো সেখানে খুন করে মামলার সাধ মিটিয়ে দেবো’।
তিনি বলেন, আজাদের হুমকিতে যতীন্দ্রনগর গ্রাম এখন প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। অথচ সে মাঝেমধ্যে প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে গ্রামে এসে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। তাকে সহায়তা দিচ্ছে তার চাচাতো ভাই বারী গাজী।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রহমান আরও বলেন, ২০০২ সালে শ্যামনগর থানায় সন্ত্রাসীদের তালিকায় নাম উঠে আজাদ গাজীর। সুন্দরবনের দস্যুতা ও অন্যান্য অপরাধের জন্য র্যাবের হাতে আটকও হয় ৩০ বারের কম নয়। তার হাতে সুন্দরবন এলাকার বাওয়ালীরা জিম্মি। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তার বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা, মাদক পাচার, ডাকাতি সহ নানা অভিযোগ। ৩০ জুলাই সে আমাদের ভাই আব্দুল আলিমকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রহমান এসব ঘটনার প্রতিকার, আজাদ গাজী ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার এবং যতীন্দ্রনগর ও সুন্দরবন এলাকাকে বনদস্যূ মুক্ত করতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।